ওঁরাও সম্প্রদায়ের ভূমি দখলের প্রতিবাদে বিশিষ্টজনদের বিবৃতি

সিলেট নগরীর বালুচর এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে ওঁরাও সম্প্রদায়ের জায়গা দখল চেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন সিলেটের নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।

শনিবার (২০ এপ্রিল) গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বাংলাদেশের অপরাপর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মত সিলেটের ওঁরাও সম্প্রদায়ও একটি নিরীহ ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। সিলেট মহানগরীর বালুচরের  চন্দনটিলা এলাকায় তাদের আদি নিবাস। প্রকৃতির সন্তান এই নিরীহ নৃগোষ্ঠী তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে শত শত বছর যাবৎ ঐ এলাকায় বসবাসরত আছে।‘

‘গত শতাব্দীর আশির দশক থেকে ঐ এলাকায় বসবাসরত চিহ্নিত একটি ভূমিদস্যূ দুর্বৃত্তচক্র ওঁরাও সম্প্রদায়ের সমূহ সহায়-সম্পত্তি আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে নানাবিধ কুকর্মের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়। ইতিমধ্যে বিপুল সংখ্যক ওঁরাও সম্প্রদায়ের পরিবার-পরিজন ও তাদের সমুদয় সহায় সম্পত্তি ও বসতভিটা থেকে অন্যায় ও নৃশংসতার মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে,‘ বিবৃতিতে উল্লেখ।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে ১৫/২০টি পরিবার অত্যন্ত বিপদজনক ও মানবেতর জীবনযাপনের মাধ্যমে সেখানে টিকে আছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, চিহ্নিত ও ঘৃণিত ঐ ভূমিদস্যু দুর্বৃত্তচক্র এবং তাদের লেলিয়ে দেয়া গুন্ডাবাহিনী অতি সম্প্রতি ওঁরাও সম্প্রদায়ের অসহায় মানুষদের তাদের বসতভিটা থেকে সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ করে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছে।‘

বিশিষ্টজনদের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘ওঁরাও সম্প্রদায়ের পরিবার সমূহের স্বত্ব দখলীয় সহায় সম্পত্তি, শ্মশান ও দেবালয় সহ ধর্মীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন, নানান ধরণের যোগাযোগী ও জাল দলিলাত সৃষ্টি করে তাদেরকে বলপূর্বক উচ্ছেদ করার ঘৃণ্য বর্বরোচিত প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। সাম্প্রতিক ঈদ-নববর্ষ ছুটি কালীন সময়ে তাদের ঐ অপচেষ্টা আবারো শুরু করেছে।‘

ঐ ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী, জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে সিলেট জেলা জজ আদালতে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিশিষ্টজনরা বিবৃতিতে সময়ক্ষেপণ বা কালবিলম্ব না করে রাষ্ট্রের পক্ষে দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে নিরীহ নৃগোষ্ঠী ওঁরাও সম্প্রদায়ের অসহায় মানুষদের রাষ্ট্রের সংবিধান স্বীকৃত অধিকার, ক্ষমতা ও তাদের অস্তিত্ব রক্ষার নূন্যতম ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।

বিবৃতিদাতারা গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যরিস্টার আরশ আলী, সিলেট জেলা সিপিবি সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য, জাসদ জেলা সভাপতি লোকমান আহমেদ, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট জেলা সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, আইডিয়ার নির্বাহী নাজমুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অম্বরিষ দত্ত, নাগরিক মৈত্রীর অ্যাডভোকেট সমর বিজয় সী শেখর, সিপিবি জেলা সভাপতি সৈয়দ ফরহাদ হোসেন, গণতন্ত্রী পার্টির জেলা সভাপতি আরিফ মিয়া, ঐক্য ন্যাপ সিলেট জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পাল, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা আহবায়ক উজ্জ্বল রায়, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা সভাপতি সিকান্দর আলী, জাসদ মহানগর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফারুক আহমদ, বাসদ জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের  জেলা সভাপতি সিরাজ আহমদ, জাসদ মহানগর সাধারণ সম্পদক গিয়াস আহমদ, গণতন্ত্রী পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক জুনেদুর রহমান চৌধুরী, জাসদ জেলার সাধারণ সম্পাদক কে.এ কিবরিয়া, ঐক্য ন্যাপ সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস বাবুল, সাম্যবাদী আন্দোলন জেলা আহবায়ক সুশান্ত সিনহা সুমন, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাছান, বাসদ জেলা সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দীনবন্ধু পাল, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা নেতা অ্যাডভোকেট হুমায়ূন রশীদ শোয়েব, সাম্যবাদী আন্দোলন জেলা নেতা অ্যাডভোকেট রণেন সরকার রনি প্রমুখ।