বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তে মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষা শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি) নিয়ে। সম্প্রতি এই লেকের পাড়ে ইত্যাদি পয়েন্ট নামে ইট, রড, সিমেন্ট দিয়ে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করার পর মুক্তিযোদ্ধাসহ সর্বমহলে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। এমন বাস্তবতায় প্রশাসন সেই স্থাপনা ভেঙে দিয়ে সরিয়ে নেয়।
পূর্বের ক্ষোভ এখন পুরোপুরি প্রশমিত না হওয়ার আগেই শনিবার (২৭ জানুয়ারি) আবারও দেখা যায় এই লেকের চলাচলের সড়কে কাটাতারের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এতে করে ফের ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
শহীদ সিরাজ লেক তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ট্যাকেরঘাট এলাকায় অবস্থিত। এই লেকের পাশে কবর দেয়া হয়েছিল স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সিরাজুল ইসলামকে। তার নামেই নামকরণ করা হয় শহীদ সিরাজ লেক।
কয়েক যুগ ধরে লেক ঘেষা চলাচলের সড়ক হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় বাসিন্দাসহ সর্বমহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সড়কে থাকা কাটাতারের বেড়া সরিয়ে সড়কটি মেরামত করারও দাবী উঠেছে সর্বমহলে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহীদ সিরাজ লেক নিয়ে এমন সব কর্মকাণ্ডের অশুভ বুদ্ধি কার মাথা থেকে আসে তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া প্রয়োজন। তারা কি চায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সিরাজের নাম মুছে ফেলতে। এই কাটাতারের বেড়া সরিয়ে নিতে দাবী জানিয়েছেন চলাচলকারী মানুষজন, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ঠেলাগাড়ি চালকসহ এলাকার বাসিন্দারা।
সুমন তালুকদার, জসিম মিয়া, সাকিল মিয়াসহ স্থানীয়রা বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে ছোট থেকেই চলাচল করে আসছি। পাশে যে সড়কটি আছে সে সড়ক দিয়ে কয়লা, চুনাপাথরের ট্রাক চলাচল করে। আর সড়কটি মাটির, একেবারেই মানুষজন চলাচলের জন্য উপযোগী নয়। বিকল্প সড়ক তৈরি না করে এই সড়কটি বন্ধ করাও সঠিক হয়নি। এতে করে স্কুল কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ মধ্যনগর, ধর্মপাশা উপজেলা থেকে এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী মানুষজন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
তাহিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আসাদুজ্জামান রনি জানান, ‘খুব দ্রুতই কাটা তারের বেড়াটি সড়িয়ে নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভিন জানান, ‘এই সড়কটি মূল সড়ক নয়। পাশ দিয়ে যাওয়া সড়কটিই মূল সড়ক। এই সড়কই সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য ব্যবহার করতেই সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করা হয়েছে জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে। মূল সড়কটি ভালোভাবে চালু করা হলে লেক দিয়ে চলাচলের সড়কটি পর্যটকসহ সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে, তবে ভাড়ী যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হবে না।’