অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবককে বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভিএম স্কুল) সেই প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়েছে।
রোববার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর তাকে নিজ কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক বিমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়।
রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দুর্গা রানী সিকদারের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এতে বলা হয়, প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকে জনস্বার্থে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকায় সংযুক্তের আদেশ দেয়া হয়েছে। পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত নিজ বেতন ও বেতনক্রমে নামের পাশে বর্নিত পদ ও কর্মস্থলে বদলি করা হলো।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকায় সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি এই সপ্তাহের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে গত ২১ মার্চ বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুনের উপস্থিতিতে তার কক্ষে এক বিচারকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর মাকে অপদস্থ করার অভিযোগ ওঠে।
বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেয়াকে কেন্দ্র করে বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে সহপাঠীদের বিরোধকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
এরপর ২১ মার্চ সকাল ১১ টার দিকে প্রধান শিক্ষকের ডাকে চার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে আসেন। সেই সময় ওই বিচারক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জেলে দেয়ার হুমকি দেন। এ সময় এক অভিভাবককে বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে।
অভিভাবকদের অপদস্থ ও শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বিদ্যালয়ে আসেন। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করার আশ্বাস দেন।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিনকে প্রধান করে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।
এ ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠলে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। ২৩ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বদলি সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিতে ওই আদেশ দেয়া হয়।