বোরো মৌসুমে এবার চালের উৎপাদন বেশ ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে উৎপাদন বাড়লেও দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমার আশা কম। খবর প্রথম আলোর।
দেশে বোরো মৌসুমে সবচেয়ে বেশি চাল উৎপাদিত হয়। এবার বোরো মৌসুম তেমন কোনো দুর্যোগের মুখে পড়েনি। ইতিমধ্যে হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলেও ধান পাকতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও কাটা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) ৯ এপ্রিল বাংলাদেশের দানাদার খাদ্যবিষয়ক এক প্রতিবেদনে বলেছে, এবারের বোরো মৌসুমে বাংলাদেশে চাষের আওতা ৫০ হাজার হেক্টর বেড়ে ৪৯ লাখ হেক্টর হয়েছে বলে তাদের ধারণা। আর চাল উৎপাদন ৫ লাখ টন বেড়ে ২ কোটি ৫ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে। মৌসুম শুরুর আগে এক মাসে দাম ২-৫% বেড়েছে।
দাম উল্লেখযোগ্য হারে না কমার কারণ হিসেবে তিনটি বিষয় সামনে আনা হচ্ছে: ১. চালের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া। ২. বিশ্ববাজারে চালের দাম বেশি এবং বাংলাদেশের জন্য সাশ্রয়ী উৎস ভারতের চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা। ৪. বাংলাদেশে মার্কিন ডলারের সংকট ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, যা চাল আমদানিকে ব্যয়বহুল করেছে।
ইউএসডিএর প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়, চালের দাম এখনকার পর্যায় থেকে কমার সম্ভাবনা নেই।
খাদ্য মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, চালের দাম কমে গিয়ে উৎপাদনে কৃষকের আগ্রহ কমে যাক, সেটা সরকারও চায় না। এ কারণে চালের দাম বর্তমান অবস্থার কাছাকাছি থাকুক বলে তারা চায়।
খাদ্যসচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন ,বোরো ধান ওঠা শুরু করেছে। চালের দাম এত দিন যা ছিল, তার চেয়ে কমবে বলে আশা করি। তবে কৃষক যাতে ভালো দাম পান, দাম যাতে বেশি না কমে যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, উৎপাদন খরচও বেড়েছে, তা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকাল শনিবারের হিসাবে, ঢাকার বাজারে এখন এক কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। মাঝারি চাল ৫৫ থেকে ৫৮ এবং সরু চাল জাতভেদে ৬৫ থেকে ৭৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগের তুলনায় চালের দাম ২ থেকে ৫ শতাংশ বেড়েছে।
দেশে ২০২০ সাল থেকেই চালের দাম বাড়তি। ওই বছরের শুরুতে মোটা চালের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। এরপর বিভিন্ন সময় চাল আমদানি হয়েছে, আমদানির জন্য শুল্ক-কর কমানো হয়েছে, বাজারে অভিযান হয়েছে, দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে—কোনো কিছুই দাম কমাতে পারেনি।