এপ্রিল মাসে দেশে ৫২৬ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৫২ জন নিহত


  • রেলপথে ৪২টি দুর্ঘটনায় নিহত ৩৪ জন, আহত ৬৭ জন
  • নৌ-পথে ১০ টি দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জন, নিখোঁজ ১৬ জন

বিদায়ী এপ্রিল মাসে সারাদেশে ৫২৬ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৫২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮৫২ জন। একই সময়ে রেলপথে ৪২ টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত, ৬৭ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১০ টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত, ১৬ জন নিখোঁজ হয়েছে।

সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৭৮ টি দুর্ঘটনায় ৫৯৭ জন নিহত এবং ৯১৯ জন আহত হয়েছে। এ সময়ে ২১৫ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৩১ জন নিহত, ১৭১ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৪০.৮৭ শতাংশ নিহতের ৪১.৮৪ শতাংশ, আহতের ২০.০৭ শতাংশ। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানায় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সংগঠনটির তথ্য মতে, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৬৩ জন চালক, ৯০ জন পথচারী, ৩৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩২ জন শিক্ষার্থী, ০৪ জন শিক্ষক, ২৫ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৭৩ জন নারী, ৬৩ জন শিশু, ০১ জন সাংবাদিক, ০৯ জন চিকিৎসক, ০১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ০৩ জন আইনজীবী ও ০১ জন প্রকৌশলী এবং ০৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

যার মধ্যে নিহত হয়েছে ০৪ জন পুলিশ সদস্য, ০১ জন আনসার সদস্য, ০১ জন বিমানবাহিনীর সদস্য, ০২ জন বিজিবি সদস্য, ১৪৪ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৭৮ জন পথচারী, ৪৭ জন নারী, ৪৩ জন শিশু, ৩০ জন শিক্ষার্থী, ২২ জন পরিবহন শ্রমিক, ০৪ জন শিক্ষক, ০৩ জন চিকিৎসক, ০১ জন সাংবাদিক, ০২ জন আইনজীবী , ০১ জন প্রকৌশলী ও ০৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৭৪০ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ৩০.৫৪ শতাংশ মোটর সাইকেল, ২৩.২৪ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৫.১৩ শতাংশ বাস, ১৩.৬৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৫.৮১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬.৭৫ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৪.৮৬ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৮.৬৬ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২২.৬২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬.৩৪ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১.৭৮ শতাংশ বিবিধ কারনে, ০.১৯ শতাংশ গাড়ির চাকায় ওড়না পেচিয়ে এবং ০.৩৮ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ২৮.৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৪.২২ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩০.৯৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.৭০ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.১৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৩৮ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, মার্চে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ :

১. দেশের সড়ক মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল।
২. ব্যাটারিচালিত ও ইঞ্জিনচালিত তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি।
৩. জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা
৪. বিভিন্ন উৎসব মুহুর্তে হঠাৎ যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো।
৫. জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকদের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে।
৬. মহাসড়কের নির্মান ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা।
৭. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন।
৮. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো।