স্বার্থান্বেষী একটি মহলের প্ররোচনায় মিজু আহমদ লুলু নামের সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা জনৈক এক ব্যক্তি ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. এনামুল হক সরদারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মিথ্যা, বানোয়াট, কুরুচিপুর্ণ এবং কল্পনাপ্রসূত অভিযোগ উত্থাপন করেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষক।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তাদের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. বশির উদ্দীন।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, এনামুল হক সরদার ২০০৩ সালে ইমরান আহমদ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই কলেজের ছাত্রীরা উপজেলার মধ্যে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করে যাচ্ছে। দীর্ঘ ২০ বছরে আমরা এলাকার জনপ্রতিনিধি, অভিভাবক ও সচেতন নাগরিক হিসেবে কোনোদিন অধ্যক্ষ বা কোনো শিক্ষক বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাইনি। অথচ প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরের উপজেলা বালাগঞ্জ থেকে তথাকথিত শিক্ষানুরাগী মিজু আহমদ লুলু এমন জঘন্য মিথ্যা অভিযোগ করলেন, যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এনামুল হক সরদারের কর্মতৎপরতার বিবরণ দিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমাদের জানামতে ড. এনামুল হক সরদার একজন দক্ষ প্রশাসক, শিক্ষাবিদ, শিক্ষানুরাগী এবং সজ্জন ব্যক্তি। এর আগে তিনি গোয়াইনঘাট কলেজ ও জৈন্তিয়া কলেজে প্রায় নয় বছর অধ্যাপনা করেন। ইমরান আহমদ মহিলা কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের সময় ২০১৪ সালে শিক্ষা ছুটি নিয়ে ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি.এইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। কলেজের দুঃসময়ে তিনি ও তার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.রাজিয়া সুলতানা চৌধুরী কলেজে আর্থিক সহযোগিতা করে দাতা সদস্যও হন।
‘২০১৮ সালে যখন ইমরান আহমদ মহিলা কলেজকে জাতীয়করণ করা হয় তখন কাগজপত্র পর্যালোচনাকালে মন্তব্য কলামে লিখা হয় কলেজের অধ্যক্ষের নিয়োগকালীন সময়ে কাম্য অভিজ্ঞতা ছিলো না’ মিজু আহমদ লুলুর এমন অভিযোগের ব্যাখ্য হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০০৩ সালে যখন এনামুল হক সরদারকে নিয়োগ দেওয়া হয় তখন নতুন কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগের বেলায় পূর্ণ অভিজ্ঞতার প্রয়োজন ছিলো না। গভর্নিং বডি তাকে যথাযথ নিয়মেই নিয়োগ প্রদান করেন। এবং তিনি যথানিয়মেই এমপিও ভুক্ত হন। কলেজ জাতীয়করণের বাছাই কমিটিতে ড. এনামুল হক সরদার ব্যক্তিগতভাবে নিজে আত্মীকৃত হতে আগ্রহী না হওয়ায় অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত বিষয়টির ব্যাখ্যা প্রদান করেননি। অথচ মিজু আহমদ লুলু এই বিষয়টির অপব্যাখ্যা করে এনামুল হক সরদারকে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলন আয়োজনকারীদের ভাষ্য, মিজু আহমদ লুলুর বক্তব্য থেকে আমাদের মনে হয়েছে তিনি কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে লোভ লালসায় পড়ে এরকম কাজ করেছেন। একটি মহল তার ওই বক্তব্য যেভাবে প্রচার করছে তাতে স্পষ্ট প্রমাণ হয় এসকল অভিযোগ দায়ের ও সংবাদ সম্মেলন ওই মহলের ইঙ্গিতেই পরিকল্পিতভাবে হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনের আয়োজকরা আরও ‘বলেন, আমরা মিজু আহমদ লুলুর ব্যাপারে তার নিজ থানা বালাগঞ্জে খোজখবর নিয়ে জেনেছি তিনি বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। জুয়া আইনের তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিলো।’
সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে হেয় করতে যারা এরকম জঘন্য কাজের সাথে জড়িত তাদেরকে যেন শাস্তির আওতায় আনার জন্য সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলন আয়োজকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পলিনা রহমান, জৈন্তাপুর উপজেলার ১নং নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইন্তাজ আলী, ২ নং জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ফখরুল ইসলাম, ৪নং দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, ৬নং চিকনাগুল পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান চৌধুরী, ১০নং আলীগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরান আহমদ মহিলা কলেজের গর্ভনিং বডির সাবেক সদস্য মো. নজরুল ইসলাম, ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহেদ আহমদ, শিক্ষানুরাগী ও রাজনীতিবিদ আব্দুল হাফিজ, সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী আনোয়ার হোসেন, শিক্ষক ও সাংবাদিক মঞ্জুর আহমদ, ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক গোপিকা রঞ্জন দাশ, জীতেন্দ্র কুমার চাট্টার্জ্জী।
সংবাদ সম্মেলনে মিজু আহমদ লুলুর স্বাক্ষর করা একটি অঙ্গীকারনামাও উপস্থাপন করা হয় যাতে তিনি উল্লেখ করেন একটি মহলের প্ররোচনায় তিনি ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন।