একদিনেই বেড়াতে পারেন সিলেটের যে ৫ আকর্ষণ

এই ঈদের ছুটিতে সিলেট নগরীতে অবস্থান করছেন কিংবা দেশের অন্য কোনস্থান থেকে একদিনের জন্য সিলেট বেড়াতে এসেছেন? তাহলে চটজলদি সকালের নাস্তা সেরে দিনের মধ্যেই বেড়িয়ে আসতে পারেন সিলেটের ৫টি আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র।

ব্যক্তিগত বাহন না থাকলে ভাড়া নিতে পারেন সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, মাইক্রোবাস কিংবা কার আর যাতায়াত বাবদ খরচ হতে পারে আড়াই থেকে চার হাজার টাকা। তাহলে চটজলদি জেনে নিন কোন কোন স্পট আর কীভাবে যাবেন।

রাতারগুল

দেশের অন্যতম মিঠাপানির জলারবন রাতারগুল তার সৌন্দর্য্য মেলে ধরে বৃষ্টি দিলেই। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে রাতারগুল তার হিজল-করচের সৌন্দর্য্য নিয়ে অপেক্ষা করছে পর্যটকদের জন্য।

রাতারগুলের অবস্থান সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায়, শহর থেকে মাত্র ২৩ কিলোমিটার দুরে। যে কোন বাহনে সহজেই পৌঁছে যেতে পারেন রাতারগুল গ্রামের ঘাটে। সেখান থেকে নির্ধারিত ৭৫০ টাকা ভাড়ায় নৌকা নিয়ে ঘুরে আসতে পারবেন প্রকৃতির এই নান্দনিক সৌন্দর্যের আঁধার।

লালাখাল

রাতারগুল ঘুরে সোজা চলে যেতে পারেন সিলেটের স্বচ্ছ স্ফটিক জলের নদ লালাখাল ভ্রমণে। এটি জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত, রাতারগুল থেকে ৩৭ কিলোমিটার দুরে।

দুইদিনের সুউচ্চ টিলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া এ নদীর নীল জল যে কাউকেই করবে বিমোহিত। লালাখালের পাড়ে আছে চা-বাগান যার সৌন্দর্য্যও আমোদিত করবে আপনাকে।

সারিঘাট থেকে ঘন্টাচুক্তি নৌকা ভাড়া নিয়ে বেড়াতে পারেন এই অনন্য নদ। ঘন্টাপ্রতি ভাড়া সাড়ে ৫০০ টাকার মতো।

জৈন্তিয়া রাজ্য

লালাখাল নদ ভ্রমণ শেষে ত্রিশ মিনিটের মধ্যেই ঘুরে ফেলতে পারবেন সুপ্রাচীন জৈন্তিয়া রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ যা এই অঞ্চলের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।

লালখাল থেকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের উপরেই ইরাবতী দেবীর পান্থশালা, জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের লাগোয়া রহস্যেঘেরা জৈন্তেশ্বরী মন্দির, মেগালিথ, রাজবাড়ি, মেঘাতিলক, কালাপাথর, বিজয়সিংহের মন্দিরসহ নানা প্রাচীন স্থাপনা আপনাকে কিছু সময়ের জন্য হলেও ভুলিয়ে দিবে আধুনিক সময়।

 

শ্রীপুরের রাংপানি

জৈন্তেশ্বরীকে বিদায় জানিয়ে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে আর সামান্য এগুলেই শ্রীপুর চা বাগান, হ্রদ এবং রাংপানি নদের রাজ্য। মহাসড়কের পাশে চা বাগান যেমন বিমোহিত করবে, তেমনি হ্রদ এবং পায়ে হেটে হ্রদের পাশে রাংপানি নদী আপনার ভ্রমণপিপাসু মনে তৃপ্তির ছোঁয়া দিবে।

পাথুর নদের স্বচ্ছ জল, পাশে খাসিয়া পল্লী, সুপারিবাগান আপনার ভ্রমণের ক্লান্তি ভুলিয়ে দিবে। তবে সীমান্তবর্তী হওয়ায় নদীতে নামার সময় পার্শ্ববর্তী বিজিবি ক্যাম্পে অবহিত করা উচিত।

 

জাফলং

একদিনের ভ্রমণের সর্বশেষ গন্তব্য প্রকৃতিকন্যা জাফলং। সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ধরেই শেষ গন্তব্য গোয়াইনঘাট উপজেলা জাফলং যেখানে পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ জল, ভারতীয় সীমান্তের সবুজ পাহাড় এক নৈসর্গিক অনুভূতি দিবে।

নৌকা না নিয়ে পায়ে হেটে পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ জলে হরেকরঙা পাথর, ডাউকির ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে যেতে পারেন জিরো পয়েন্টে। হাতে সময় থাকলে বেড়াতে যেতে পারেন মায়াবি ঝরণায়। পাশেই রয়েছে খাসিয়াপুঞ্জি ও পানপল্লী। রয়েছে জাফলং চা বাগান। সবশেষে গোধুলিলগ্নে ফিরতি পথ ধরতে পারবেন সিলেট শহরের দিকে।

সারাদিনের ভ্রমণের মধ্যে দুপুরের খাবারের জন্য সবচেয়ে ভালো স্থান হবে জৈন্তাপুর উপজলা সদর। এখানে বেশ কিছু ভালো মানের রেস্টুরেন্ট আছে যেখানে সুলভ মূল্যে খাবার পাওয়া যায়।

ভ্রমণে সাথে থাকা প্লাস্টিকের পানির বোতল, চিপসের প্যাকেট ইত্যাদি অবশ্যই কোন নৈসর্গিক স্পটে ফেলে আসবেন না। সাথে নিয়ে এসে সুবিধাজনক স্থানে ডাস্টবিনে ফেলা উচিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের সুরক্ষা আমাদের সবার দায়িত্ব আর সিলেট ভ্রমণে এটাই হোক সকলের কাম্য।