উপবন ট্রেনের সূচি পরিবর্তনের দাবি ৪ স্টেশনের যাত্রীদের

সিলেট, মাইজগাঁও, কুলাউড়া ও শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন ব্যবহারকারী যাত্রীরা আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন। উপবনের যাত্রীরা ঢাকা না সিলেট অভিমুখে যাত্রার সময় মধ্যরাতে পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। ঢাকা থেকে উপবন ট্রেনে ফিরে মাঝ রাতে নিশ্চিত বিপদের মুখোমুখি, দ্বিগুণ–তিনগুণ ভাড়া গুণতে হয়। এমনকি সর্বস্ব হারানোর ভয় তো থাকেই যাত্রীদের।

বড়লেখা উপজেলা আজিমগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মনিরুল, তারেক ও জসিম জানান, বাসের ভ্রমণ কষ্টদায়ক তাই তারা ঢাকা থেকে কুলাউড়া জংশন স্টেশন পর্যন্ত আন্তঃনগর উপবন ট্রেনে আসেন। আগে থেকে সিএনজি অটোরিকশা রিজার্ভ করে রাখতে হয়। তার জন্য ৩শ টাকার স্থলে গুনতে হয় ৮০০ থেকে একহাজার টাকা। কুলাউড়া স্টেশনে রাত আড়াইটা কিংবা পৌনে ৩টায় নেমে ২৫ কিলোমিটার দূরে যাওয়াটাও ঝুঁকিপূর্ণ। ছিনতাইকারী আর ডাকাতের ভয়ে তটস্থ থাকতে হয়।

জুড়ী উপজেলার বাসিন্দা মামুনুর রশীদ ও রফিক মিয়া জানান, দিনের বেলা একটা সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে যেতে লাগে দেড়শ টাকা। মাঝরাতে ট্রেন থেকে নামলে গুনতে হয় ৩শ টাকা।

কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের বাসিন্দা সেলিম আহমদ জানান, ঢাকা থেকে ফিরে বাড়িতে যাওয়ার কোন গাড়ী পাওয়া যায় না।

শরীফপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সাবেক সেনা কর্মকর্তা আরজান আলী জানান, ঢাকায় কাজ সেরে শমসের নগর স্টেশনে ফিরে সকাল হওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হয়। পাহাড়ী অঞ্চল দিয়ে বাড়ি ফেরার ঝুঁকি বেশি। ফলে রেলস্টেশনে ভোর হওয়া পর্যন্ত সময় কাটাতে হয়। স্টেশন এলাকায় মাদক চোরাকারবারী, মাদক সেবক আর ছিনতাইকারীদের উৎপাতে আতঙ্কে সময় কাটে।

শহরের মাগুরা এলাকার বাসিন্দা শিমুল ও লস্করপুর এলাকার বাসিন্দা শিপন জানান, স্টেশন নেমে বাসা পর্যন্ত পৌঁছা দুষ্কর হয়ে পড়ে। একদেড় কিলোমিটারের রাস্তা অতিক্রম করে বাসায় যেতে সিএনজি অটোরিকশা একশ দেড়শ টাকা দাবি করে। ছিনতাইকারীর ভয়ে হেঁটে যাওয়ার কোন উপায় নেই।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে যায় রাত সাড়ে ৮টায়। ট্রেনটি শায়েস্তাগঞ্জ এসে পৌছায় রাত পৌনে একটায়, শ্রীমঙ্গল স্টেশনে পৌঁছায় রাত দেড়টায়, শমসের নগর স্টেশনে পৌঁছায় সোয়া ২টায়, কুলাউড়া স্টেশনে রাত আড়াই টায় এবং সিলেট স্টেশনে পৌঁছায় রাত সাড়ে ৪টায়। এসকল স্টেশনের যাত্রীরা স্টেশনে নেমে পড়তে হয় বিপাকে। ট্রেনটি পূর্বের সময়সূচিতে ফিরে গেলে যাত্রীরা বিশেষ করে সিলেট কুলাউড়াসহ মাইজগাঁও এবং শমসেরনগর এসব স্টেশনের যাত্রীরা ফযরের নামাযের পর অর্থাৎ ভোরের আলোয় আলোকিত হওয়ার পর তাদের স্টেশনে নামবে। তাতে ভাড়ার ক্ষেত্রে ২-৩ গুণ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হবে না। আবার ছিনতাইকারী কিংবা ডাকাতের ভয়ও থাকবে না।

কুলাউড়া স্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টার মুহিবুর রহমান জানান, ‘যারা ট্রেনের সময়সূচি নির্ধারণ করেন তাদের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত। ট্রেনের এই সিডিউলের কারণে যাত্রীও তুলনামূলক কম হয়। পুরাতন টাইমটাই ভালো ছিলো।’