আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বিএনপি। উপজেলা নির্বাচনে দলের কেউ অংশ নিলে আগের মতোই কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে দলটির হাই কমান্ড।
সাংগঠনিক বিভাগগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক ভার্চুয়াল বৈঠকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও নির্বাচনে না যাবার পক্ষে মত দেন বলে জানা গেছে।
রবিবার (৩ মার্চ) ঢাকা বিভাগীয় জেলা-উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বৈঠকে একপর্যায়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রসঙ্গে উঠলে তৃণমূল নেতাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। তারাও নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
এ সময় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানান, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তই বহাল রয়েছে। উপজেলা নির্বাচনে দলের কেউ অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক জেলার শীর্ষ নেতারা গণমাধ্যমকে বলেন, তাদের কাছে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাচনে দলের কেউ অংশ নিলে তাদের বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে। অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনেরও কেউ অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধেও একই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ‘বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে-এমন কথা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। কারণ, এই সরকার ভোট ডাকাত, তা বহুবার প্রমাণ করেছে। যে কারণে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক দলগুলো দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল। তাদের নির্বাচন বর্জনের ডাকে সাড়া দিয়ে ৯৫ ভাগ ভোটার ভোট দিতে যাননি। অবৈধ ডামি সরকার ও অবৈধ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপিসহ কোনো গণতান্ত্রিক দল আগামী দিনে উপজেলা নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করতে পারে না। আমার জানামতে, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামতও এর ব্যতিক্রম নয়।’
এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না, এটা দলের সিদ্ধান্ত। এ সিদ্ধান্ত থেকে দল সরে আসেনি। বরং অতীতের মতো যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে, তাদের বিরুদ্ধে দল আগের মতোই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।’
প্রসঙ্গত, আগামী মে মাসে চার ধাপে ৪ শতাধিক উপজেলা পরিষদের নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, তৃতীয় ধাপে ১৮ মে এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে ২৫ মে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেবে না বলে েইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে।
সূত্র : যুগান্তর