ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ও হেফাজতে নেওয়ার পর কুর্দি নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় চলমান বিক্ষোভ থামছেই না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর মাত্রা বাড়ছে এবং পরিস্থিতি ইরানি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এমনকি এই প্রথমবারের মতো ইরানের পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশের আশনোয় শহরের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বিক্ষোভকারীদের হাতে।
কয়েকটি টুইটার ভিডিওর আলোকে ডয়চে ভেলে ফার্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামি বিপ্লবের পর এই প্রথমবারের মতো ইরানের পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশের আশনোয় শহরের নিয়ন্ত্রণ বিক্ষোভকারীদের হাতে।
তাওহিদ জাভাদি নামে একজন গণমাধ্যমকর্মী টুইটবার্তায় লিখেছেন, ১৯৫৭ সালের পর প্রথমবারের মতো একটি শহর সম্পূর্ণরূপে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
টুইটারে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, শহর ছেড়ে মোটরবাইকে করে পালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে তেহরানের রাস্তা থেকে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছে, বিক্ষোভকারী জনতা তেহরানের সব রাস্তা দখল করেছে। তবে নিরপেক্ষভাবে দাবির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইন্টারনেটে হস্তক্ষেপ, ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ ব্লক করা, আইআরজিসি ও বিচার বিভাগের হুমকি, এমনকি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি। কোনো কিছুই থামাতে পারছে না নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে থাকা মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলা ইরানে চলমান বিক্ষোভ।
ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘাত হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে সরকারি এজেন্টকে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকা মানুষেরা তাকে গুলি না ছুড়তে অনুরোধ করলেও এজেন্ট কথা শোনেনি। এরই মধ্যে অনলাইনে তার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
অন্য একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তেহরানের রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
শুক্রবার রাতে ইরানের অনেক শহরে রাস্তায় মানুষজন বিক্ষোভ করেছে। তারা এ সময় ‘খামেনির মৃত্যু’, ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’ এবং ‘আমরা জেগে উঠব’ স্লোগান দেয়।
বিক্ষুব্ধরা ‘আমরা মরব, আমরা ইরানকে ফিরিয়ে নেব’ স্লোগানও দেয়।
সন্ধ্যার পরও যখন অন্ধকার নেমে এসেছে, তখনও বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন থামেনি। তেহরান, খোরমাবাদ, আরদাবিল, ইসফাহান, কেরমানশাহ এবং কারাজের বিভিন্ন এলাকায় রাতেও বিক্ষোভ হয়েছে।
বেশির ভাগ শহরে, বিক্ষোভকারীরা খামেনিসহ ইসলামি প্রজাতন্ত্রের নেতাদের ছবি ছিঁড়ে ফেলেছে।
মাশহাদ শহরের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা ইসলামি বিপ্লবের নেতা ‘মুর্তেজা মোতাহারির’ মূর্তিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।