ঈদ-উল-ফিতরের আর বাকি মাত্র কয়েকদিন। রমজান মাসের শেষ সময়ে এসে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর বাজারের দর্জিপাড়ার কারিগররা।
প্রতিটি সেলাই মেশিনের চাকা ঘুরছে, কেউ তৈরি করছেন পাঞ্জাবি, কেউ তৈরি করছেন শার্ট, কেউবা আবার প্যান্ট কিংবা নারীদের পোশাক। দর্জিপাড়ার কাটিং মাস্টাররাও ব্যস্ত মাপমতো কাপড় কাটতে।
গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইনের পোশাক ঈদের আগে তৈরি করতে দিনরাত কাজ করছেন তারা। গার্মেন্টসে তৈরি পোশাক নয়, বরং দর্জিদের হাতে বানানো নিজের পছন্দমতো পোশাকে নিজেদের ফুটিয়ে তুলতেই দর্জিদের কাছে ভিড় গ্রাহকদের।
তবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় কাপড়ের দাম এবং দর্জিদের মজুরি অনেকটা বেড়েছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। তবে ইচ্ছাকৃত নয়, বরং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির সাথে তাল মেলাতে কিছুটা মজুরি বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি দর্জিদের।
জগন্নাথপুর পৌর শহরের জগন্নাথপুর বাজার এলাকায় শার্ট বানাতে আসা গ্রাহক সুহেল মিয়া বলেন, ‘আমি একটি দুই পকেটওয়ালা শার্ট বানাতে দিয়েছি। বাজারে হরেক রকমের জামা কাপড় কিনতে পাওয়া যায়, কিন্তু দুই পকেটওয়ালা শার্ট পাওয়া যায় না। তাই দর্জির কাছ থেকে পোশাক বানাতে এসেছি। তবে গত বছরের তুলনায় দর্জিরা মজুরি অনেক বাড়িয়েছেন।‘
আরেক গ্রাহক আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি সবসময় জোব্বা পাঞ্জাবি পড়ি আর জোব্বা রেডিমেইড কিনতে পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও মাপে হয় না। তাই প্রতিবার দর্জিদের কাছ থেকে বানাই। এ বছরও বানাতে এসেছি। তবে ঈদের আগে দিতে পারবে কিনা সেটা নিয়েই চিন্তায় আছি। আগের তুলনায় কাপড় এবং মজুরি দুটোরই মূল্য বেড়েছে।‘
জগন্নাথপুর পৌর শহরের দর্জি কাউছার বলেন, ‘বছরের অন্যান্য তেমন কাজ না থাকায় আমাদের অলস সময় কাটাতে হয়। ঈদ আসলে একটু কাজ বাড়ে। তবে এ বছর কাজের চাপ অনেক বেশি। এক সপ্তাহ পর্যন্ত রাতে মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘন্টা ঘুমাই। বাকি সময় কাজের ব্যস্ততায় কাটছে।‘
দর্জি লিটন দেব বলেন, ‘বাজারের প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তো আমরা বাড়াইনি। বাজারে সুঁই-সুতাসহ সব জিনিসের দাম বাড়ছে। তাই আগের তুলনায় সামান্য মজুরি বাড়াতে হয়েছে।‘
জগন্নাথপুর পৌর শহর ব্যবসায়ী তদারকি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোশাহিদ মিয়া বলেন, ’গ্রাহকরা যাতে সহনীয় দামে দর্জিদের কাছ পোশাক বানাতে পারে এবং দর্জিরাও যাতে ন্যায্যমূল্য পায়, এজন্য ব্যবসায়ী সমিতির তদারকি রয়েছে।‘