১৫ আগস্টের দুঃসহ স্মৃতিচারণ করে বিস্ময় প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জাতির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, সেই বাঙালি হয়েও কীভাবে ঘাতকরা জাতির পিতার বুকে গুলি চালিয়েছিল! ঘাতকরা একসময় আমাদের বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করতো। আজও তারা তৎপর, আমাকে ও আওয়ামী লীগকে সরিয়ে দিতে চায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে এ দেশের মানুষের কল্যাণ হয় না।’
বুধবার (৩ আগস্ট) গণভবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির নবনির্বাচিত বোর্ড সদস্যরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
সাক্ষাৎকালে বোর্ড সদস্যরা বন্যা, করোনা, রোহিঙ্গাসহ দুর্যোগকালে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির তৎপরতা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। তারা বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট ইতিহাসের জঘন্যতম ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তাঁর পরিবারের শাহাদাতবরণকারী সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্যোগকালে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে মানবতার সেবায় সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, দেশব্যাপী রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যক্রম বিস্তারে বরাবরের মতো তার সরকার ও তার ব্যক্তিগত সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। সেইসঙ্গে আগামী ৪ বছরের জন্য আন্তর্জাতিক রেডক্রস সংস্থা আইএফআরসির সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আব্দুল ওয়াহাবকে অভিনন্দন জানান।
আবেগজড়িত কন্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা রেডক্রস সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মানবতার কল্যাণে। ‘৭৫-এ জাতির পিতাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করার পর সেই রেডক্রসেরই এক টুকরো কাপড়কে কাফন বানিয়ে তাঁকে দাফন করা হয়েছিল।’ প্রধানমন্ত্রী হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের পুরনো মর্যাদা ফিরিয়ে আনাসহ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিকে আধুনিকায়নের একটি পরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশনা দেন।
গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে ভাইস চেয়ারম্যান নূরুর রহমান, ট্রেজারার এম এ সালাম, মহাসচিব কাজী সফিকুল আজম, আরমা দত্ত, এম মঞ্জুরুল ইসলামসহ অন্য বোর্ড সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।