আসাম-মেঘালয় সীমান্তে গোলাগুলি, নিহত ৬

ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের সীমান্তে গোলাগুলিতে এক বনরক্ষীসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।

মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সকালে কাঠ চোরাচালানের চেষ্টার সময় মেঘালয়ের একটি গ্রামের কাছে ঘটনাটি ঘটে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিন সকালে আসামের পশ্চিম কার্বি আংলং জেলার সীমান্তের কাছে মেঘালয়ের পশ্চিম জৈন্তা পাহাড় জেলার মুকরোহ গ্রামে ঘটা এ ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এই ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে নোটিশের মাধ্যমে সাতটি জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করেছে মেঘালয় সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতর। নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন মেঘালয়ের বাসিন্দা এবং একজন আসামের বনরক্ষী।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সকাল ৭টার দিকে আসামের বনবিভাগের একটি টিম চোরাই কাঠ বোঝাই একটি ট্রাক আটকানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ট্রাকটি না থেমে দ্রুত গতিতে এগিয়ে গেলে তারা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পিছু নেয়। এক পর্যায়ে ট্রাকটি আন্তঃরাজ্য সীমান্ত পেরিয়ে মেঘালয়ে ঢুকে পড়ে। বনরক্ষীরা রাজ্যটির মুকরোহ গ্রামের কাছে ট্রাকটির একটি চাকা পাংচার করে সেটিকে থামাতে সক্ষম হয়। কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসীরা ঘটনাটিকে অনধিকার অনুপ্রবেশ হিসেবে বিবেচনা করে আসাম পুলিশ ও বনরক্ষীদের ঘিরে ফেলে।

আসামের পশ্চিম কার্বি আংলং জেলার এসপি ইমদাদ আলি জানান, মেঘালয়ের সীমান্ত পার হয়ে ট্রাকটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি করে, গুলিতে একটি চাকা পাংচার হওয়ার পর তারা ট্রাকসহ তিন জনকে আটক করে। ঘটনাস্থল থেকে ট্রাকটি নিয়ে ফেরার সময় উত্তেজিত সশস্ত্র লোকজন আক্রমণ করে।

অপরদিকে আসাম পুলিশ ‘বিনা উস্কানিতে গুলি করেছে’ বলে দাবি করে একে ‘অমানবিক’ বলে বর্ণনা করেছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা। তিনি জানান, ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হয়, পরে আহত আরও দুইজন হাসপাতালে মারা যায়।

এদিকে, এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার রাতে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে উত্তেজিত জনতা আসামের নাম্বারধারী একটি এসইউভিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দমকল কর্মীরা আগুন নিভিয়ে ফেললেও ততক্ষণে গাড়িটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। তবে এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে ৫০ বছর ধরে সীমান্ত বিরোধ চলার পর চলতি বছরের মার্চে একটি ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। চুক্তিটি দুই রাজ্যের মধ্যে চলমান দীর্ঘস্থায়ী বিরোধের সমাধান করবে বলে মনে করা হচ্ছে।