আরও বর্জ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা

সব বড় শহরের পরিবেশ রক্ষায় বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। নির্মাণ শুরু না হলেও ইতোমধ্যে দুটো কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। খুব শিগগিরই আরও কয়েকটি বর্জ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানা গেছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ এবং পিডিবি সূত্র বলছে, অনেক দিন থেকেই এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে তাদের একক প্রচেষ্টা ছিল। তবে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুৎ বিভাগের এই আহ্বানে খুব একটা সাড়া দেয়নি। এখন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আইপিপি মডেলে নির্মাণ করা হচ্ছে। কেন্দ্রগুলোর মালিকানা থাকছে বেসরকারি কোম্পানির হাতে। তবে এখানে বর্জ্য বিক্রি করে লাভবান হবে সিটি কর্পোরেশন।

শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে একটু বাড়তি দরে ভর্তুকি দিয়ে হলেও এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। এখান থেকে বিদ্যুৎ পাওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের দিকে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে।

মনে করা হচ্ছে, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেলে শহর পরিচ্ছন্ন থাকবে। এতে পরিবেশের উন্নতির পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে। জীবাণু ছড়াবে না।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সংকট কাটাতে আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য সব মিলিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। এজন্য এখন থেকেই কাজ করা হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রামে এই ধরনের কেন্দ্র স্থাপনের আলোচনা চলছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে যশোরে আরও একটি কেন্দ্র করা হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ক্রয় চুক্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে আমিন বাজারে প্রথম বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দ্রুততম সময়ে নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত আমিনবাজারে একটি কেন্দ্রর কাজ শিগগিরই শুরু হবে। অন্যদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এবং ময়মনসিংহ দুটি কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।

আমিনবাজারে ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। প্রতিদিন এখানে তিন হাজার টন বর্জ্য সরবরাহ করবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। তবে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এ ধরনের একটি উদ্যোগ আগে ভাগে নিলেও এখনও সেটির চুক্তি হয়নি।

সূত্র বলছে, বড় শহরের সবগুলোতেই এ ধরনের কেন্দ্র নির্মাণ করা সম্ভব। জেলা শহরগুলোতে এখনই সম্ভব না হলেও বিভাগীয় সব শহরেই কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

বলা হচ্ছে, উন্নত সব দেশেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করলেও আমরা পিছিয়ে রয়েছি। দেশের বাইরে পচনশীল এবং অপচনশীল বর্জ্য আলাদা বিনে ফেলা হলেও আমাদের এখানে এক সঙ্গেই ফেলা হয়। রাজধানী ঢাকাতে বড় বড় ডাস্টবিনে নিয়ে সেগুলো পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা আলাদা করে। এসময় চারপাশের পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে ওঠে।