আবারও ইসরায়েলের ক্ষমতায় নেতানিয়াহু

মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদি দেশ ইসরায়েলের সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর উগ্রজাতীয়তাবাদী জোট। এতে ২০২১ সালের পর আবারও ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন সমালোচিত নেতানিয়াহু।

বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।

১২০ আসন বিশিষ্ট ইসরায়েলে সংসদ নেসেটে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট পেয়েছে ৬৪ আসন। তার নিজ দল লিকুদ পার্টি পেয়েছে ৩২ আসন। এতে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত ফলাফলে এ তথ্য জানা যায়। গত মঙ্গলবার ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

নেতানিয়াহু যেসব উগ্রজাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে জোট গড়ে ক্ষমতায় ফিরেছেন সেসব দল কয়েক বছর আগেও ইসরায়েলের রাজনীতিতে এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।

এদিকে নেতানিয়াহুর জোট যে ক্ষমতায় আসবে- সেটি নির্বাচন শেষে বুথ ফেরত জরিপ থেকেই জানা গিয়েছিল। বুধবার যখন প্রায় ৮৫ ভাগ ভোট গণনা শেষ হয় তখন সমর্থকদের নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা বড় জয়ের দ্বারপ্রান্তে আছি’, তিনি ওই সময় ‘একটি স্থিতিশীল ও জাতীয় সরকার’ গঠনের প্রতিজ্ঞা করেন।

নির্বাচনে নেতানিয়াহুর সবচেয়ে বড় জোট রিলিজিয়াস জায়োনিজম পার্টি পেয়েছে ১৪ আসন। উগ্রপন্থি এ দলটির নেতা ইতামার বেন-গেভির আপাদমস্তক একজন ফিলিস্তিন বিরোধী মানুষ। তার বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু আগের জোট দলগুলো নেতানিয়াহুকে প্রত্যাখান করলে এই উগ্রপন্থি দলের সঙ্গে জোট বাঁধেন তিনি।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ ফলাফল মেনে নেওয়ায় এখন ইসরায়েলে প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ নেতানিয়াহুকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন। আগামী সপ্তাহে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

নেতানিয়াহুকে আগামী ২৮ দিনের মধ্যে সরকার গঠন করতে হবে। বলা হচ্ছে ইসরায়েলের রাজনীতির ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে বেশি ডানপন্থিদের নিয়ে সরকার গঠিত হবে।

এদিকে নেতানিয়াহু এমন সময় আবারও প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতে যাচ্ছেন যখন তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে বিচার হচ্ছে।

এর আগে ২০২১ সালে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জোট গঠন করে ক্ষমতায় আসেন নাফতালি বেনেট। ওই সময় নিজ জোটে আরব, ইসরাইলি দলগুলোকে রেখেছিলেন তিনি। মূলত নেতানিয়াহুকে ক্ষমতা থেকেই সরানোর উদ্দেশ্য ছিল তার। এতে সফলও হন বেনেট। ২০২১ সালের নির্বাচনে হেরে গিয়ে দীর্ঘ ১২ বছর পর ক্ষমতা হারান নেতানিয়াহু। কিন্তু বেনেট তার জোটকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারেননি। এতে জোট ভেঙে যায়। ফলে ইসরাইলিদের আবারও নতুন নির্বাচনে ভোট প্রদান করতে হয়। সেই নির্বাচনে দুই বছরের মধ্যে আবারও ক্ষমতার সর্বোচ্চ আসনে বসতে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু।