আফগানিস্তানজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ এবং ব্যাপক ঠান্ডা আবহাওয়ায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে ৭০ হাজার গবাদিপশুও প্রাণ হারিয়েছে। আফগানিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় আল জাজিরাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক এই সংবাদমাধ্যমটি।
এতে বলা হয়েছে, শৈত্যপ্রবাহ এবং ব্যাপক ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে গত সপ্তাহে আফগানিস্তানজুড়ে ৭০ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও ৭০ হাজার গবাদি পশু মারা গেছে বলে বুধবার ওই আফগান মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তানের অনেক প্রদেশে ব্যাপক ঠান্ডা আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে। এছাড়া আফগানিস্তানের মধ্যাঞ্চলীয় ঘোর অঞ্চলে গত সপ্তাহান্তে সর্বনিম্ন -৩৩ (মাইনাস ৩৩) ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা করা।
আফগানিস্তানের আবহাওয়া অফিসের প্রধান মোহাম্মদ নাসিম মুরাদি বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে চলতি বছরের শীতকাল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি শীতল।’
মুরাদি আরও বলেন, ‘চলমান এই শৈত্যপ্রবাহ আরও এক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে চলবে বলে আশঙ্কা করছি আমরা।’
এদিকে ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ঠান্ডা আবহাওয়ায় নিহতদের আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। মুজাহিদ টুইটারে লিখেছেন, ‘কিছু প্রদেশে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে আমাদের বেশ কিছু নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন শুনে আমরা দুঃখিত।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং কর্মকর্তাদের যতটা সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সাহায্য করার এবং আরও হতাহতের ঘটনা রোধে সম্ভাব্য সকল কিছু ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে’।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ছবি এবং ভিডিওতে আফগানিস্তানের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি প্রদেশে ভারী তুষারপাতের কারণে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০ বছর পর ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশই এখনও পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
আর এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থাও আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত দল ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পর থেকে তালেবান শাসনের অধীনে এটি আফগানিস্তানের দ্বিতীয় শীত। দেশটি একটি মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং আফগানিস্তানের ৩ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি খাদ্য সংকটের সম্মুখীন।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং তালেবান প্রশাসনের আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা এই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে।