আনোয়ারুজ্জামানের হাত ধরে সিলেট বহুদূর এগিয়ে যাবে : পরিকল্পনামন্ত্রী

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি বলেছেন, ‘আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী একজন সৎ ও যোগ্য মানুষ। তার হাত ধরে আমাদের এই আঞ্চলিক রাজধানী আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে। দরিদ্র মানুষের উপকার হয় এমন যেকোন প্রকল্প নিয়ে আমার কাছে গেলে আমি শেখ হাসিনার কেরানি হিসাবে সর্বোচ্চ সহযোগীতা করবো। প্রধানমন্ত্রী সবসময় সিলেটবাসীর প্রতি আন্তরিক।’

তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের মানুষ, এটা আমার শহর। অবশ্যই আমি সিলেট সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে আগের মতো ভবিষ্যতেও আর বেশী করে কাজ করবো।’

বুধবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট সিটি করপোরেশনের দেয়া নাগরিক সংবর্ধনার জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে আমি সর্বোচ্চ সহযোগীতা করেছি। তার ধারবাহিকতা অবশ্য বজায় থাকবে। সিলেটে একটা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হবে। ঢাকা-সিলেট ৬ লেনের কাজ শুরু হয়েছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক ৪ লেনে উন্নীত হবে। মৌলভীবাজারেও বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে। শেখ হাসিনা সারাদেশের সুষম উন্নয়ন চান।’

তিনি বলেন, ‘জাতির সামনে এখন পরীক্ষার সময়। আমাদের পথ বেছে নিতে হবে। উন্নত বিশ্বের মতো আত্মমর্যাদা রক্ষা করে আমরা চলতে পারবো কি না এখন তারই পরীক্ষা চলছে। ক্ষমতার লোভে কিছু মানুষ ব্যক্তিগত প্রতিহিংসায় যেসব অপতৎপরতা চালাচ্ছেন তা কতটা উচিৎ বা অনুচিৎ আপনাদেরকেই তা নির্ধারণ করতে হবে।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনার আগে উন্নয়ন পরিকল্পনায় দেশের ৮০ হাজার গ্রাম ছিলো না। তিনিই প্রথম তা বাস্তবায়ন করেছেন। তার অন্যতম প্রকল্প গ্রাম হবে শহর। এই অঞ্চলে প্রথম শেখ হাসিনা গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি গ্রামের দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং ওষুধ দিচ্ছেন। তার প্রেরণায় সুনামগঞ্জের হাওরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করতে পেরেছি, ৫০০ বেডের হাসপাতাপতাল, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় করছি। আমরা বিশ্বম্ভরপুর থেকে নেত্রকোনা পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে উড়াল সড়ক করছি। শাল্লার মতো নিম্নাঞ্চল থেকে গাড়িতে করে সারা বছর ঢাকায় যাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। রানীগঞ্জ সেতু হয়েছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধ্রুী বলেন, ‘বৃহত্তর সিলেটের কৃতি সন্তান পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনি দেশকে নিয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আমাদের অভিভাবক। সিলেটের উন্নয়নে তার সহযোগীতার হাত অবশ্যই আরও প্রসারিত হবে। এটা আমাদের বিশ্বাস।’

নগরভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ।

এসময় সংবর্ধিত অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুুরী। এছাড়া সিসিক মেয়র ও কাউন্সিলরবৃন্দ সংবর্ধিত অথিতিকে মানপত্র, ফুল ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন সিলেটের আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. আবু নাসের জাফর উল্লাহ, সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ই্উনিটের সাবেক কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, সিলেট জেলা বারের পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসিনা বেগম চৌধুরী, সিলেট উইমেন্স চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়।

আরও পড়ুন : পাথরের সাথে আলোচনা হয় না : বিএনপির উদ্দেশ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি করপোরেশনের একাধিকবার নির্বাচিত ২৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৌফিক বকস লিপন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা ময়নুল ইসলাম। গীতা পাঠ করেন সিসিক’র কর শাখার কর্মকর্তা জ্যোতিষ চক্রবর্তী। ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠ করেন শ্রীমৎ মহানম ভিক্ষু ও রেভারেন্ড ফিলিপ সমাদ্দার।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজতকান্তি গুপ্ত ও জান্নাতুল নাজনিন আশা।