সুনামগঞ্জে আদালত চত্বরে প্রতিপক্ষের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত বৃদ্ধের নাম খোকন মিয়া (৫০)। তিনি জগন্নাথপুর উপজেলার গলাখাল গ্রামের ফটিক মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন- জগন্নাথপুর উপজেলার গলাখাল গ্রামের মৃত মহিবুর রহমানের ছেলে ফয়েজ আহমেদ (৩০) এবং মো. আফরোজ মিয়ার দুই ছেলে মো. সাজিদ মিয়া ও মো. সেবুল মিয়া (২৫)।
এ ঘটনায় আদালত চত্বরে থাকা আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা হতভম্ব হয়ে পড়েন। আইনজীবী ও আদালতে থাকা লোকজন হামলাকারীদের আটক করে রাখেন। পরে পুলিশ এসে তাদের আটক করে নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আদালত এলাকার আইনজীবী সহকারী সমিতির কার্যালয় প্রাঙ্গণে খোকন মিয়াকে ঘিরে দাঁড়ান কয়েকজন। এ সময় একজন খোকন মিয়াকে ঘুষি মারেন। আরেকজন ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। অন্য আরেকজন হাতে থাকা চাবি দিয়ে আঘাৎ করতে থাকেন। রক্তাক্ত খোকন মিয়াকে তাৎক্ষণিক সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী সহকারী মিফতাউল আলম বলেন, হত্যা করার উদ্দেশেই ওই বৃদ্ধকে আঘাত করা হচ্ছিল।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী হাবিবুর রহমান বলেন, ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাতের সময় বোঝা গেছে ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। প্রত্যক্ষদর্শীরা হামলাকারীদের আটকানোর চেষ্টা করেও পারেননি।
খোকন মিয়ার চাচাতো ভাই মাসুক মিয়া হাসপাতালে মরদেহের পাশে বিলাপ করতে করতে জানান, গ্রামের লাল মিয়ার সঙ্গে বাড়ির জায়গা নিয়ে তাদের বিরোধ ছিল। এ নিয়ে মামলার তারিখে আদালতে এসেছিলেন তারা। তিনি আদালত প্রাঙ্গনের এক দোকানে বসেছিলেন। তার পাশ থেকে খোকন মিয়া উঠে যান। এ সময় লাল মিয়ার ছেলে ফয়েজ, ইসমাইল, বাদশা মিয়ার ছেলে সাহান এবং আফরোজ মিয়ার ছেলে সেবুল ও সাজিদ তার ভাই খোকন মিয়াকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে খুন করে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ডা. রবীন্দ্র তালুকদার জানান, গুরুতর আহত খোকন মিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যান। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে।
নিহত খোকন মিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল বাহার বলেন, এ ঘটনায় আমি আজই হত্যা মামলা দায়ের করব।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ফয়েজ আহমেদ, সাজিদ মিয়া ও সেবুল মিয়াকে আটক করা হয়েছে।