আদালতের নির্দেশ অমান্য করে দোকান ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এক যুক্তরাজ্য প্রবাসীর কেনা ভূমি নিয়ে ভূমিখেকো চক্র দখলবাজী চালিয়ে যাচ্ছে। ভূমিখেকো চক্রটি ওই প্রবাসীর স্বজনসহ অন্যদের নানাভাবে নির্যাতন, আর্থিক ক্ষতি করে গেলেও পুলিশ কার্যকর কোন ভূমিকা পালন করছে না বলে অভিযোগ করেছেন তার ভাই গোলাপগঞ্জের বাদেপাশা ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামের মৃত রিয়াসদ আলীর ছেলে মাহতাব উদ্দিন।

বুধবার (৫ জুলাই) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে মাহতাব বলেন, ‘আমার ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী নজরুল ইসলাম সিলেট সদর উপজেলার ফড়িংউড়া মৌজার জেএলনং ৬০, ৩২৫১ খতিয়ানের হাল জরিপি ৪১২৬নং দাগ থেকে এক শতক দোকান কোটাসহ ভূমি ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর গোলাপগঞ্জের আমকোনার মৃত জফুর আলীর ছেলে মৃত ফয়জুল ইসলামের স্ত্রী হাসনা বেগমের কাছ থেকে ক্রয় করেছিলেন। একই মৌজা ও জেএল নম্বরের ৪১২১নং দাগের আরও ৩১ পয়েন্ট ভূমি তিনি ক্রয় করেন। এই দাগ থেকে আরও এক শতক ভূমি জনৈক সিরাজ মিয়ার কাছ থেকে ক্রয় সূত্রে মালিক নজরুল।’

তিনি বলেন, হাসনা বেগমের স্বামী মৃত ফয়জুল ইসলাম সিলেট নগরীর কাজিটুলা এলাকার মৃত আব্দুল কুদ্দুছ খানের ছেলে আলম খানের কাছ থেকে এই ভূমি কিনেছিলেন। মাঠ পর্চা আলম খানের নামে আসায় তিনি সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে একই জমি আবারও হাসনা ও সিলেট সদরের ফড়িংউড়া গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে ফরিদ মিয়ার কাছে জাল দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে বিক্রি করেন। বিষয়টি জানার পর আমি সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি (কোতোয়ালি সিআর মামালা নং ৪৬৫) যা বর্তমানে তদন্তাধীন। মামলায় আলম খান, হাসনা বেগম, ফরিদসহ হাসনার ভাই সিলেট সদরের কান্দিরপথ গ্রামের রাকিব আলীর দুই ছেলে দুলাল ও ইসলাম এবং দলিল সৃজনকারী সিলেট সাবরেজিস্ট্রার অফিসের মহুরির নজরুল ইসলামকে (সনদ নং ৩৪২) আসামী করি। এই জাল দলিল বলে তারা দোকানগুলোর ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ভাড়া আদায়ের চেষ্টা করে। নানাভাবে হুমকি ধমকি ও হয়রানি করতে থাকলে সাহেবেরবাজার ব্যবসায়ী সমিতিসহ খাদিমনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আপোষ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন। কিন্তু হাসনা ও তার ভাইয়েরা আপোষ না মানায় আমি সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদলতে ১৪৫ ধারায় হাসনা বেগম ও তার ৪ ভাই দুলাল জামাল কামাল এবং ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি (নং ৩৩/২২)। এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয় গত ৬ এপ্রিল। রায়ে বলা হয়, এই ভূমি নিয়ে অন্য একটি মামলায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ বহাল। তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে নিজেদের অবস্থানে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে চলতে হবে। এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জকেও আইনী পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

মাহতাব বলেন, ‘আমি এ নির্দেশ মানলেও হাসনা-দুলাল গংরা তা না মেনে ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে হুমকি-ধমকি দিয়ে ভাড়া আদায় করছে। এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জকে অবগত করলেও তারা কোন ভূমিকাই রাখছেন না। এমনকি আদালতের নির্দেশ অমান্যের বিষয়টি জানিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে গত ১২ জুন একটি আবেদন করি। কিন্তু আজো তার কোন সুফল পাইনি।’

মাহতাব এ ব্যাপারে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে এসএমপি কমিশনার, এয়ারপোর্ট থানার ওসি ও এসির প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি একজন প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধার বিনিয়োগকৃত সম্পদ সুরক্ষায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাহেবেরবাজার এলাকার সর্বস্তরের সচেতন মানুষের সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।