আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও শেখ হাসিনাকে প্রয়োজন : ড. মোমেন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘শুধু দেশের জন্য নয়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যেও শেখ হাসিনার সরকারের প্রয়োজন আছে। ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে অপতৎপরতা চলছে। একটি মহল অন্যের কাঁধে বন্দুক রেখে এ অঞ্চলে প্রক্সি যুদ্ধ করার চক্রান্ত করছে। শেখ হাসিনা থাকলে এটা হবে না।’

সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও মতবিনিময়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, ইউক্রেনে প্রক্সি যুদ্ধের কারণে ইউরোপের সব দেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সারা ইউরোপ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কাজেই আমাদের দেশের স্থিতিশীলতা কোনভাবেই নষ্ট করা যাবে না। এজন্য শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেদিকে তরুণ, শিক্ষার্থীদেরকে সজাগ, সাবধান থাকতে হবে।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও ইমাদুর হোসেইনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি জয়নাল আবেদীন।

সোমবার সকালে সিলেট নগরীর নয়াসড়কে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে দিনের নির্বাচনি প্রচারাভিযান শুরু করেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি নয়াসড়কস্থ প্রেসবিটারিয়ান চার্চে কেক কাটার মধ্য দিয়ে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এ সময় তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি-ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি আমাদের সকলের। তাই সকল শ্রেণি-পেশার জনগণের উন্নয়নই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। বড়দিন উদযাপনের আনন্দ মানুষের মধ্যে যেন সত্যিকার মানবতাকে জাগ্রত করে; মহামানব যিশু যে প্রেম, শান্তি ও সম্প্রীতির শিক্ষা প্রচার করেছেন, তার যথার্থ প্রতিফলন যেন সবার জীবনে ঘটে।

ড. মোমেন আরো বলেন, প্রত্যেক ধর্মেরই মূল বাণী মানবতা। বড়দিন উপলক্ষে যে প্রেম, প্রীতি ও শান্তির বাণী প্রচার করা হয় তার মূলে রয়েছে মানবতা। কোনো ধর্মই এ বোধ থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। বড়দিন মানুষকে শান্তি, প্রেম ও সম্প্রীতির শিক্ষা দেয়। দেশের সকল মানুষ ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে একাত্ম হবে-এ আশা বড়দিনে।

এ সময় প্রেসবিটারিয়ান চার্চের পাস্টার ফিলিপ বিশ্বাস ও ডিকন নিঝুম সাংমা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আগত অতিথিদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বড়দিনে সমাগত সকলে সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সহ-সভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, সহসভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিসিক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আরমান আহমদ শিপলু, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক তপন মিত্র, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সিসিক কাউন্সিলর আব্দুল মোহিত জাবেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা শফিউল আলম জুয়েল প্রমুখ।

এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় সিলেট প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ সময় তিনি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য না হলে দেশের স্থিতিশীলতা থাকবে না। এ নির্বাচন জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা, শান্তি স্থিতিশীলতা বজায় সর্বোপরি উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে সময়মতো নির্বাচন করতে হবে। তাই সরকার অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে অঙ্গিকারবদ্ধ।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন অনেক শক্তিশালী উল্লেখ করে তিনি বলেন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সরকার নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করছে। আগামী ৭ জানুয়ারি সকলকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট প্রদানের জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।

সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সুচনা বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মো. রেনু।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারের গৃহিত প্রকল্প বাস্তবায়ন তরান্বিত করতে মিডিয়া সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। তিনি চলমান উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, সাংগঠনিক সম্পাদক ছালেহ আহমদ সেলিম প্রমুখ।