টেস্টের পর টি-টোয়েন্টিতেও বেহাল অবস্থা বাংলাদেশ দলের। অবশেষে উইন্ডিজের দুয়ারে আঘাত হানা হয়েছে এক দিনের ম্যাচে। এসেছে রাঙা প্রভাত। ধরা দিয়েছে জয়। কেটেছে তিমির রাত। এবার সামনে এগুনোর পালা। লক্ষ্য সিরিজ জয়। এক দিনের ম্যাচে দুরন্ত দুর্বার বাংলাদেশের সামনে আটলান্টিকের উত্তাল ঢেউ যেন বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়াতে না পারে। সব বাধা পেরিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করবেই তামিম ইকবালের বাংলাদেশ।
আজ বুধবার (১৩ জুলাই) জিতলেই বাংলাদেশের হয়ে যাবে সিরিজ। গায়ানায় প্রথম ম্যাচ ছয় উইকেটে জিতে নিজেদের কাজটা অনেক দূর করে রেখেছে বাংলাদেশ। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে একই ভেন্যুতে ১৬ জুলাই।
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে উইন্ডিজের কাছে বাংলাদেশ যে রকম পর্যুদস্ত হয়েছিল তেমনি একদিনের সিরিজে উইন্ডিজকে পর্যুদস্ত করেছে বাংলাদেশ। ব্যাটে-বলে সমান দাপট দেখিয়ে কপোকাত করে স্বাগতিকদের। একদিনের ম্যাচে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দারুণ সময় পার করছে। তারই প্রমাণ তারা আরেকবার রেখেছে প্রথম ম্যাচে। বৃষ্টি বিঘ্নিত ৪১ ওভারের ম্যাচে উইন্ডিজকে আটকে রেখেছিল ৯ উইকেটে ১৪৯ রানে। সেই রান বাংলাদেশ তাড়া করেছিল ৯.১ ওভার হাতে রেখে চার উইকেট হারিয়ে। সামর্থ্যের বিচারে আজকের ম্যাচেও তার ব্যতীক্রম হওয়ার কথা নয়। প্রথম ম্যাচের জয়ের নায়ক ম্যাচ সেরা মেহেদি হাসান মিরাজ আজই সব হিসেব-নিকেশ ফয়সালা করে ফেলতে চান। তৃতীয় ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করতে মোটেই রাজি না। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমর তো লাস্ট ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করব না। যেহেতু আমাদের জন্য ভালো একটা সুযোগ আছে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলেই আমরা সবাই রিলাক্স হতে পারব সিরিজটা আমরা জিততে পেরেছি। এ জন্য আমাদের অবশ্যই ম্যাচটা জিততে হবে।’
মিরাজের চাওয়া পূরণ হলে বাংলাদেশের হবে ৩১তম সিরিজ জয়। আর উইন্ডিজের বিপক্ষে হবে টানা ১০ম ম্যাচ জয়।
আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নামবে। যদিও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। যদি বৃষ্টি আসে সেক্ষেত্রে সেরা একাদশে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা থাকবে। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ খেলেছিল অনেক সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে, এমন কি ওয়ানডেতেও বাংলাদেশ সাত থেকে আটজন ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলতে নামে, সেখানে প্রথম ম্যাচ খেলেছে ছয় ব্যাটসম্যান নিয়ে। এই কম্বিনেশনে বাংলাদেশ জিতে গেছে। আজকের ম্যাচে সেখানে পূর্ণতা দেওয়ার পালা।
জিতলে সেখানে ভুল-ত্রুটি খুব একটা থাকে না। তারপরও খুঁজে নিতে হয়। প্রথম ম্যাচ জেতার পর বাংলাদেশেরও দুর্বলতা ছিল। সেই দুর্বলতা ছিল ফিল্ডিংয়ে। চার চারটি ক্যাচ হাত থেকে ফসকে পড়ে গেছে। এই সুযোগে উইন্ডিজের শেষ জুটি ৩৯ রান যোগ করতে পেরেছিল। যে কারণে মঙ্গলবারের অনুশীলনে ক্যাচ ফিল্ডিংয়ে বেশ গুরুত্ব দিতে দেখা গেছে।
জয়ের জন্য বাংলাদেশ খেলতে নামবে ঠিকই। কিন্তু উইন্ডিজ কী ছেড়ে কথা বলবে? তারা কী ফিরে আসতে চাইবে না? বিষয়টি বেশ ভালোভাবেই মাথায় রেখেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তাইতো তার সতর্কবাণী, ‘ওরা চাইবে স্ট্রলিং কামব্যাক করার জন্য। স্ট্রলিং কামব্যাক করলে কি কি ডিপার্টমেন্টে কামব্যাক করতে পারে সেই ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। অলরেডি আমরা এ ব্যাপারে আলাপও করেছি। ক্যাপ্টেনও আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে। মিটিংয়েও কথা হয়েছে কিভাবে আমরা আরও বেটার ক্রিকেট খেলতে পারি। এন্ড অব দ্যা ডে ভালো খেলাটা ইম্পর্টেন্ট। সবার পারফর্ম করাটা ইম্পর্টেন্ট। সবাই যদি যার যার জায়গা থেকে পারফর্ম করতে পারে তাহলে অবশ্যই আমরা ম্যাচ জিততে পারব।’