মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করা কোঁকড়ানো চুলের ছেলেটা যে একসময় ক্রিকেটকে রাজত্ব করবে তা কে চিন্তা করেছিল। কঠোর পরিশ্রম ও দুর্দান্ত প্রতিভার সেই ছেলেটা হয়ে যান ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’। ক্রিকেট মাঠে ২৪ বছর শাসন করা সেই ছেলেটির নাম শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। আজ ৫১ বছরে পা দিলেন তিনি।
বয়সকে অনেকেই বলে থাকেন শুধুই সংখ্যা। শচিন টেন্ডুলকার যেমন ৫০-এ পা দিয়ে গতবার বলেছিলেন,এটাই একমাত্র ৫০, যেটাকে আমার ৫০ মনে হয় না।বছর পেরিয়ে সংখ্যাটা আজ দাঁড়াল ৫১। শচিনের কাছে শুধু নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের কাছে সংখ্যাটা অনন্য। কারণ, ৫১টা সেঞ্চুরি সে যে আর কারও নেই।
টেন্ডুলকারের ৫১ যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ১৯৮৯-তে তার টেস্ট অভিষেকের প্রায় ৯ মাস পর। ১৯৯০-এর ১১ আগস্ট ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। পরবর্তী প্রায় ১০ বছরে আরও ৫০টা সেঞ্চুরি করেছেন। ওদিকে ওয়ানডেতেও তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ৪৯ বার। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ১০০টা ১০০।
সব মিলিয়ে ৬৬৪ ম্যাচ খেলে করেছেন ৩৪ হাজার ৩৫৭ রান। ক্রিকেটের সব ফরম্যাট মিলিয়ে ৩০ হাজারের বেশি রান এবং ২০০ এর বেশি উইকেট রয়েছে তার ঝুলিতে। টেস্টে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৯২১ রান, ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৪২৬ রান, সর্বোচ্চ ২০০ টেস্ট ও ৪৬৩ ওয়ানডে ম্যাচের রেকর্ড। শচিনের এ রেকর্ডগুলো অমর হয়ে থাকবে বলে মত ক্রিকেট বিশ্লেষকদের।
ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরির অগ্রপথিকও তিনি। ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি গোয়ালিয়রে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৪৭ বলে অপরাজিত ২০০ রান করেন। এর মধ্যে ক্রিকেটের বরপুত্র পেয়ে যান জীবনের সেরা অর্জন। ১৯৯২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলেও পাননি ট্রফি। ২০১১ সালে ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে উঁচিয়ে ধরেন সোনালি ট্রফি।
অধিনায়কও ছিলেন শচিন। ১৯৯৬ থেকে তার নতুন পরিচয় ক্যাপ্টেন। ৭৩ ওয়ানডে ও ২৫ টেস্টে নেতৃত্ব দেন। অবশ্য সেখানে ততটা সফল তাকে বলা যাবে না। ওয়ানডেতে ২৩ জয় আর টেস্টে সাফল্য পান মাত্র চার ম্যাচে। চার বছর পর ২০০০ সালে শেষ হয় তার অধিনায়ক অধ্যায়।
যে নভেম্বরে শুরু হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, ২৪ বছর পর সেই মাসেই শেষ টেনে ফেলেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলেন শেষ ম্যাচ। ওয়াংখেড়েতে ৭৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন তিনি সেদিন।