বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘আগামী দিনে যে নির্বাচন আসছে, তা সহজ হবে না। কারণ মানুষের ধ্যান-ধারণা অনেক বদলাচ্ছে। মানুষ আগের চেয়ে অনেক সচেতন। তাই দলকে জনগণের কাছে আস্থাশীল করতে প্রতিটি নেতাকর্মীকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ ও খুলনায় ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে ভার্চুয়াল বক্তব্যে প্রধান অতিথি তারেক রহমান এসব কথা বলেন।ময়মনসিংহ টাউন হলের অডিটরিয়ামে কর্মশালার উদ্বোধন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। একই সময় খুলনা প্রেস ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলেও কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। ভার্চুয়াল বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের ৩১ দফা যে শুধু বিএনপির তা নয়, সব গণতান্ত্রিক দলের চাহিদার সমন্বয় এই ৩১ দফা। বর্তমানে যারা যেসব সংস্কারের কথা বলছেন, এসব সংস্কারের কথা দুই বছর আগেই বিএনপি বলেছিল।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ৩১ দফা হলো আগামী দিনে সরকার গঠনে সক্ষম হলে কী করা হবে তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ। এখানে আলোচনার পর এটিকে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। জনগণের আস্থা ও সমর্থন পেলেই ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব।
তারেক রহমান বলেন, ‘২০ বছর জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এবার তারা ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে। জনগণের কাছে আস্থাশীল হতে নেতাকর্মীকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। গত তিন-চার মাসে যদি আমাদের কেউ ভুল করে, তাকে সতর্ক করতে হবে।’ কর্মশালায় খুলনা ও ময়মনসিংহের বেশ কয়েকজন অংশগ্রহণকারী কিছু প্রস্তাব ও প্রশ্ন করেন।
এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তারেক রহমান জানান, তারা পরিবারের মা বা স্ত্রীদের নামে ফ্যামিলি কার্ড করার চিন্তা করছেন। এ ছাড়া কৃষকদেরও কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। পরিচয় নিশ্চিত হলে কৃষকরা সহজে সরকারি ভর্তুকির সুফল পাবেন। তিনি আরো জানান, প্রাথমিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া, শিক্ষা ও শিক্ষকদের মান উন্নয়ন এবং শিশুদের সামাজিক মূল্যবোধ শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। খেলাধুলাকে পড়াশোনার সাবজেক্টের সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে। এতে শিশুরা সুস্থ দেহে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারবে।
পরিবেশ রক্ষার পরিকল্পনার বিষয়ে তারেক রহমান জানান, খাল-নদীগুলো খননের ব্যাপারে তারা কর্মসূচি হাতে নেবেন। বৃক্ষ মেলা আবারও জোরেশোরে চালু করা হবে। পাঁচ বছরে অন্তত পাঁচ কোটি গাছ রোপণ করবেন তারা। ময়মনসিংহের কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, বিএনপি নেতা আবু ওয়াহাব আকন্দ, সুলতান আহমেদ বাবুল, ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, লাইলা বেগম প্রমুখ।
খুলনা বিভাগীয় কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারি হেলাল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শামিমুর রহমান শামীম প্রমুখ।