২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুত করতে গিয়ে সাতটি চ্যালেঞ্জকে গুরুত্ব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, বিভিন্ন সংগঠন ও গোষ্ঠীর সঙ্গে আলাপের ভিত্তিতে চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সেগুলো মোকাবিলার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
কী প্রক্রিয়ায় মোকাবিলা করা হবে জানাতে গিয়ে বক্তৃতায় তিনি বলেন, বিলাসী ও অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিত করাসহ বিদ্যমান চাহিদার প্রবন্ধি কমিয়ে সরবরাহ বৃদ্ধি করা এবং বিভিন্ন প্রকল্প অগ্রাধিকারভিত্তিতে বাস্তবায়ন ত্বরান্বিতকরণসহ বেশকিছু কৌশল নিতে হবে।
বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখকৃত চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা; গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের মূল্যবৃদ্ধিজনিত বর্ধিত ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান; বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যবহার এবং মন্ত্রণালয়/বিভাগের উচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পসমূহ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা; শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন; অভ্যন্তরীণ মূল্য সংযোজন কর সংগ্রহের পরিমাণ এবং ব্যক্তি আয়করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি করা; এবং ঢাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখা।
অর্থমন্ত্রী মনে করেন, এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের অত্যন্ত কৌশলী হতে হবে। কোনও একটি সমস্যা সঠিকভাবে সমাধান করা না গেলে তা সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে পারে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মূল কৌশল হিসেবে উল্লেখ করা হয়— বিদ্যমান চাহিদার প্রবন্ধি কমিয়ে সরবরাহ বৃদ্ধি করা। সে লক্ষ্যে আমদানিনির্ভর ও কম গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ব্যয় বন্ধ রাখা অথবা হ্রাস করা হবে। নিম্ন অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়নের গতি হ্রাস করা হবে এবং একইসময়ে উচ্চ ও মধ্যম অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা হবে।
জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের বিক্রয়মূল্য পর্যায়ক্রমে ও স্বল্প আকারে সমন্বয় করা হবে। রাজস্ব আহরণ কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে কর সংগ্রহে অটোমেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে এবং মূল্য সংযোজন কর ও আয়করের নেট বৃদ্ধি করা হবে।
একই সঙ্গে দেশের সাধারণ মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি এবং দৃঢ় ও সাহসী নেতৃত্বর কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, সংগত কারণেই কোডিড-১৯ ও ইউক্রেন যুদ্ধ উদ্ভূত অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলা করে দেশের সর্বস্তরের জনগণের জীবন-জীবিকা এবং সর্বোপরি ব্যাপক কর্মসৃজন ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এনে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা এবারের বাজেটে প্রাধান্য পাবে।
তিনি বলেন, বিগত দুই অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতিকে মূল গতিধারায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। ঠিক সামনের বছরেও ইউক্রেন সংকট উদ্ভূত বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখা হবে।