আগস্টেও রেমিট্যান্স ছাড়াল দুই বিলিয়ন ডলার

প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিভিন্ন ছাড় ও সুবিধার সুফল মিলছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেই ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে ২০৩ কো‌টি ৭৮ লাখ (২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। দেশি মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ৯৫ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ১৯ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

ডলারের দাম বৃদ্ধি এবং অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানো বন্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর অবস্থানের কারণে প্রবাসী আয় বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

একক মাস হিসেবে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের চেয়ে আগস্টে রেমিট্যান্স কমলেও গত বছরের আগস্টের তুলনায় বেড়েছে। গত বছরের আগস্ট মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৮১ কোটি ডলার। সে হিসাবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। চলতি বছরের জুলাই মাসে এসেছিল ২০৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। সে হিসাবে জুলাইয়ের চেয়ে আগস্টে ৬ কোটি ডলার বা ৩ শতাংশ কম এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রেমিট্যান্স এসেছে ৪১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, আগস্ট মাসে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬৪ কোটি ২৫ লাখ ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোতে এসেছে ৭৫ লাখ ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংক বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে এসেছে ২ কোটি ৪৩ লাখ ডলার।

এই মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৪৩ কোটি ডলার। এরপর সিটি ব্যাংকে ১৪ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকে ১৩ কোটি ২৪ লাখ ডলার, পূবালী ব্যাংকে ১১ কোটি ৪০ লাখ, ডাচ–বাংলা ব্যাংকে ১০ কোটি ১৬ লাখ ডলার এবং রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০ কোটি ডলার।

সরকারি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে আগস্ট মাসে কোনো রেমিট্যান্স পাঠাননি প্রবাসীরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠান, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা।

বৈদেশিক মুদ্রার সংকট নিরসনে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধারাবাহিকভাবে কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৯৫ টাকা।

তবে বিভিন্ন ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ ব্যাংকগুলো আমদানি বিলের জন্য নিচ্ছে ৯৭ থেকে ৯৮ টাকা। নগদ ডলার বিক্রি করছে ১০৬ থেকে ১০৭ টাকা। আর ব্যাংকের বাইরে খোলা বাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০৯ থেকে ১১০ টাকায়।