সিলেট মহানগরের আখালিয়া এলাকার ধানুহাটারপাড়স্থ আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ পরিদর্শন করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
সোমবার দুপুরে ঢাকা থেকে সিলেটে ফিরেই তিনি সরাসরি আখালিয়া এলাকার ধানুহাটারপাড়াস্থ সিলেট আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ পরিদর্শন যান।
পরিদর্শন শেষে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এসময় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সিলেট আধ্যাত্মিক নগরী। হযরত শাহজালাল রহ. ও শাহপরান রহ. স্মৃতি বিজড়িত শান্ত সিলেটকে কিছু লোক অশান্ত করতে এমন হীন প্রচেষ্টা চালিয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করে যারা এই গুজবকে ছড়িয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করেছেন এদেরকেও আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর প্রতিটি টিম আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছেন যাতে সিলেটের মানুষের কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয়। ঘটনার শুরু থেকে ঢাকা থেকে পুলিশের আইজিপি খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন। আমার সাথেও তাঁর কথা হয়েছে। তাদের তাৎক্ষনিক ভূমিকার কারণে বড় ধরনের বিপদ থেকে প্রিয় নগরী রক্ষা পেয়েছে। এই শান্ত সিলেটকে কারা অশান্ত করতে চায় এবং তাদের উদ্দেশ্যে কি? এ বিষয়ে সবার খোঁজ নিতে হবে।’
তিনি নগরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কোনো কিছু ঘটলে বা ফেসবুকে দেখলে সাথে সাথে উত্তেজিত হবেন না। আগে বিষয়টি সত্য-মিথ্যা যাচাই করুন। গতকালের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সঠিক সময় ব্যবস্থা না নিলে আমাদের জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো পারতো।’ এসময় তিনি স্থানীয় কাউন্সিলর ও সচেতন এলাকাবাসীকেও ধন্যবাদ জানান।
পরিদর্শনকালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরীফ, বিপিএম-(বার), পিপিএমসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উধ্বর্তন কর্মকর্তা ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রবিবার রাত ১০টার দিকে আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে পবিত্র কুরআন পোড়ানোর অভিযোগ উঠে।
রবিবার রাত ১০টার দিকে নুরুর রহমান ও মাহবুব আলম বস্তার ৪৫টি কোরআন শরিফ কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে শুরু করেন। এসময় স্থানীয় লোকজন দেখে ফেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং এ দুজনকে মারধর শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং জনতার হাত থেকে নুর ও মাহবুবকে উদ্ধার করে। এসময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের দিকে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকেন। এতে ১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশের কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয় এসময়। আহত পুলিশ সদস্যরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও শর্টগান ব্যবহার করে পুলিশ। পরে রাত ২টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোতোয়ালি থানা, জালালাবাদ থানা, সিআরটি ও গোয়েন্দা পুলিশের ৫ শতাধিক সদস্য কাজ করেন। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-৯ এর একটি টিমও কাজ করে।