সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকায় পবিত্র কোরআন শরীফ পোড়ানোর অভিযোগ ওঠার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যারা ফেসবুকে লাইভ করেছেন তাদের অনেককেই চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরীফ।
একইসাথে বাকীদেরও তালিকা করা হচ্ছে উল্লেখ করে ওই ঘটনায় রাতভর বিশৃঙ্খলা ও গুজব সৃষ্টিকারী চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৭ আগস্ট) দুপরে সিলেট মহানগরের আখালিয়ার ধানুহাটারপাড় এলাকা পরিদর্শন শেষে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এমন কথা জানান।
মো. ইলিয়াছ শরীফ বলেন, এ ঘটনাকে উস্কে দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই লাইভ করেছেন, আর এতে করেই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা উত্তেজিত হয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে।
এর আগে সোমবার দুপরে সিলেট মহানগরের আখালিয়ার ধানুহাটারপাড় এলাকা ও একই এলাকায় অবস্থিত আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ পরিদর্শন করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরীফ। এ সময় তার সাথে এলাকা পরিদর্শন করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
গতকাল রোববার রাতে পবিত্র কোরআন শরীফ পুড়ানোর অভিযোগে সিলেট আখালিয়া এলাকায় রাতভর তুলকালাম ঘটনা ঘটে। এমন অভিযোগে রোববার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত চরম উত্তেজনা বিরাজ করে এলাকায়। কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
পরে পুলিশ নগরের আখালিয়ার ধানুহাটারপাড়স্থ আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ও চেয়ারম্যান নুরুর রহমান এবং একই কলেজের শিক্ষক মাহবুব আলম নামের অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
আরও পড়ুন : সিলেটে কোরআন পুড়ানোর অভিযোগে শিবিরের ২ সদস্য গ্রেপ্তার
এই দুই শিক্ষক অনেকগুলো পবিত্র কোরআন পুড়িয়েছেন এমন অভিযোগ ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ উত্তেজিত হয়ে আইডিয়াল স্কুলের ফটকে জড়ো হয়ে তাদের মারধর করে। উত্তেজিত জনতা কলেজের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে।
খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ও চেয়ারম্যানকে প্রতিষ্ঠানটির একটি কক্ষে আটকে রাখে। এসময় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মখলিসুর রহমান কামরান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা চালান।
তবে পুলিশ ও কাউন্সিলরের এই চেষ্টায় জনতা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। রাত ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের বিশেষ টিম সিআরটি এবং জালালাবাদ ও কোতোয়ালি থানার অতিরিক্ত পুলিশ এবং র্যাব-৯ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
এ সময় উত্তেজিত জনতার একাংশ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এসময় পুলিশ ও উপস্থিত জনতার পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এতে পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। পুলিশের গাড়িও ভাংচুর করে জনতা।