সিলেট-৬ আসনের নির্বাচনী আবহাওয়া রং পাল্টাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী থাকার পরও বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এখন তৃণমূল বিএনপির নির্বাচনী জনসভায়। জনসভা দেখে বোঝার উপায় নেই এটি আদৌ তৃণমূল বিএনপির নাকি আওয়ামী লীগের।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় গোলাপগঞ্জ পৌরশহরের চৌমুহনীতে উপজেলার নির্বাচনী জনসভা করেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুবিন আহমদ জায়গিরদার। জনসভা পরিচালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল হক। বক্তব্য রাখেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জিল্লুর রহমান, রুকন উদ্দিন, আবুল ফজল চৌধুরী শাহেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশেদ আলম চৌধুরী রিপন, সদস্য এম এ হান্নান, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রুহেল আহমদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রুহিন আহমদ খান, সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সামাদ জিলু, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানিম রহমান ছানি প্রমুখ।
জনসভায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ভোটারদের উদ্দেশ্যে শমসের মুবিন চৌধুরী বলেন, দেশ স্বাধীন করার জন্য যেভাবে শপথ নিয়েছিলাম, শেষ নিঃশ্বাস-রক্তবিন্দু পর্যন্ত দেশ মুক্ত করার জন্য আমি যুদ্ধ করবো। আজ সেই ধরণের একটি শপথ আমি আবারও নিচ্ছি, শেষ নিঃশ্বাস-রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত এই গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষের জন্য কাজ করবো।
তিনি বলেন, ‘আগমী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি ঐতিহাসিক নির্বাচন। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই নির্বাচন যোগ্যতার প্রার্থী নির্বাচন, আপনাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন। মাত্র দুই-তিন দিন আছে প্রচারণার, আপনাদের আত্মীয়-স্বজন, ভাই-বোন, পাড়া-প্রতিবেশি, প্রবাসী অনেক সিলেটি আছেন যারা এই নির্বাচনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন তারা গোলাপগঞ্জ- বিয়ানীবাজারে একটি বিশেষ পরিবর্তন চায়, আর সেই পরিবর্তনের জন্য তারা আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
শমসের মুবিন বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের জন্য বিদেশে কথা বলেছি, বাংলাদেশের জন্য আমি কিছু করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার এলাকা গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষের জন্য কি করতে পেরেছি? আমি দেখলাম আমার বাকি যে জীবনটা রয়েছে তাদের জন্য কাজ করার চেষ্টা করি এবং সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আপনারা আজ আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আগামী ৭ জানুয়ারি দেশপ্রেমকে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মাথায় রেখে ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং নিশ্চিত করবেন আপনার ভোট সঠিকভাবে গণনা করা হয়।
জনসভার পূর্বে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে উপস্থিত হন।
উল্লেখ্য, নির্বাচনে কোনো রকম জোটভূক্ত না হয়ে আলাদাভাবে নির্বাচন করছে তৃণমূল বিএনপি। শুরু থেকেই দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব বলে আসছিলো সরকারের সাথে তাদের কোনো সমঝোতা হয় নি। তবে গত কয়েকদিন ধরেই দলটির চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরীর নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ।