সামরিক আইন জারির পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল অভিশংসনের মুখোমুখি হয়েছেন। যদিও পার্লামেন্ট সদস্যদের বিরোধিতার মুখে সামরিক আইন জারির আদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই তার এমন সিদ্ধান্ত বদল এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে নতুন রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করেছে। খবর রয়টার্সের। বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার বিরোধী আইন প্রণেতারা সামরিক আইন জারি করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার জন্য রাষ্ট্রপতি ইউনকে অভিশংসনের দাবি জানান।
এছাড়াও আকস্মিক মার্শাল ল’ জারির আদেশ মেনে নিতে পারেননি দেশটির আইন প্রণেতারা। পরে পার্লামেন্টের ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন এর বিপক্ষে ভোট দেন। একইসঙ্গে বিরোধী আইন প্রণেতারা তাকে অভিশংসনের দাবি জানান।
এদিকে বিরোধী দলের আইনপ্রণেতাদের একটি জোট জানিয়েছে, তারা আজকেই পার্লামেন্টে ইওলকে অভিশংসন করার জন্য একটি বিল উত্থাপন করবেন এবং আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য ভোটের আয়োজন হবে।জোটের সদস্য হোয়াং উন-হা সাংবাদিকদের বলেন, শিগগির প্রেসিডেন্টের কার্যক্রম স্থগিত ও তাকে অভিশংসনের প্রস্তাব পাস করার দিকেই এখন পার্লামেন্টের নজর থাকা উচিত।
এর আগে মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ায় জরুরিভিত্তিতে সামরিক আইন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। তিনি টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘কমিউনিস্ট বাহিনীর’ হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।তবে আকস্মিকভাবে সামরিক শাসন জারির আদেশ মেনে নিতে পারেননি দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা। দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারির পর দেশটির পার্লামেন্ট ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়।
প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পার্লামেন্টের বাইরে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁদের স্লোগান দিতে শোনা যায়। একপর্যায়ে কিছু সময়ের জন্য পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন সেনাসদস্যরা। ভবনের ওপরে হেলিকপ্টার নামতেও দেখা যায়।প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বশেষ সামরিক আইন জারি করা হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। তখন দেশটির দীর্ঘমেয়াদি সামরিক স্বৈরশাসক পার্ক চুং-হি একটি অভ্যুত্থানের সময় নিহত হন।