সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সীমানা সম্প্রসারণের প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও নগরায়নের কোন সুবিধা পাইনি সেসব এলাকার বাসিন্দারা। শুরুর দিকে সম্প্রসারিত এলাকায় ৪টি আঞ্চলিক অফিস স্থাপন করে যেন দায় সেরেছে নগর কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগী বাসিন্দারা বলছেন, বর্ধিত এলাকায়, পানিয় জলের সংকট, নেই ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, নেই রাস্তাঘাটের সংস্কার। পাননি ন্যুনতম নাগরিক সুযোগ সুবিধাও। তাছাড়া সুবিধা-অসুবিধা বলারও কেউ নেই।
২০২১ সালের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ গেজেট এস, আর, ও নং-২৮৮-আইন/২০২১ দ্বারা সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার, খাদিমনগর, খাদিমপাড়া ও টুলটিকর এবং দক্ষিন সুরমা উপজেলার কুচাই, বরইকান্দি ও তেতলী ইউনিয়নকে অন্তর্ভূক্ত করে সীমানা সম্প্রসারণ করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।
পূর্বের ২৭ টি ওয়ার্ডের সাথে যুক্ত হয় আরও ১৫টি ওয়ার্ড। যেখানে জনসংখ্যা প্রায় ৪ লাখ।
এদিকে ইউনিয়ন থেকে নগরের প্রবেশের পর এই ৪ লাখ মানুষ পড়েছে মহা বিপাকে। স্বাভাবিক নিয়মে বন্ধ হয়েছে উপজেলা কিংবা ইউনিয়নের সেবা। বাড়েনি ন্যুনতম সুযোগ সুবিধা। এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনের সেবা দেয়ার কথা থাকলেও তারা নির্বিকার। এমন বাস্তবতায় অবহেলা আর দুর্ভোগে চলছে বর্ধিত এলাকার মানুষের নগরজীবন।
সম্প্রসারিত ৩০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাওসার আহমেদ জানান, সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্তির পর জায়গা-জমির দাম বাড়া ছাড়া কোন উন্নয়ন হয়নি তাদের এলাকায়। ড্রেনেজ ব্যাবস্থাপনা, সড়ক সংস্কার কিংবা অবকাঠামোগত উন্নয়ন কিছুই হয়নি। আবর্জনার সড়কের আশপাশে আবর্জনার স্তূপ থাকলেও তা দেখার কেউ নেই।
সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, নগর সম্প্রসারিত করার পরই এসব এলাকায় ৪টি আঞ্চলিক অফিস স্থাপন করা হয়েছে। যেগুলোতে একজন করে আঞ্চলিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও নিয়োগ দেয়া হয়। এসব আঞ্চলিক অফিস থেকে সিটি নির্বাচনের আগে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত নাগরিক সেবা প্রদানের কথা থাকলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
৩৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আজমল হোসেন জানান, তাদের এলাকায় একটা আঞ্চলিক অফিস থাকলেও সেটা নামে আছে কাজে নেই। নাগরিক সেবা পাওয়া তো দূরের কথা, বেশিরভাগ সময় অফিসই বন্ধ থাকে। নির্বাচন আসায় বুঝা যাচ্ছে তারা সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক। না হলে অজপাড়াগায়ের মত এখনও অনুন্নত তাদের এলাকা।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক বলেন, ঢাকার বিশেষজ্ঞ দলের মাধ্যমে বর্ধিত এলাকার চাহিদা নিরূপণ করে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট ডিপিপির মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। এগুলোকে সুইস করে তারা একটা প্যাকেজ করেছেন। সেটা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাচাইবাছাই হওয়ার পর এপ্রোভ হয়েছে। এখন সেই প্যাকেজ চাহিদাপত্র একনেকে যাওয়ার পথে।
সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড সংখ্যা বাড়ায় জনসংখ্যার পাশাপাশি বেড়েছে নাগরিক সমস্যাও। তাই নতুন ওয়ার্ডগুলোতে উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার দাবি সাধারণ জনগণের।