সরকার পতনের একদফা দাবিতে বিরোধী দলের তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচিতে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নানামুখি পদক্ষেপ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসেবে চালকদের দেওয়া হচ্ছে হ্যালমেট। চালক, ট্রেনের পরিচালক থেকে শুরু করে সব স্টাফদের জন্য কেনা হয়েছে জ্যাকেটসহ সুরক্ষা সামগ্রী।
রেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সারা দেশে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সব স্টেশনসহ স্পর্শকাতর স্থানে রেলওয়ের দুটি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে এ ব্যাপারে পুলিশের সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে।
ট্রেনে পাথর মেরে লোকোমাস্টারদের (চালক) আহত করার ঘটনা নিয়মিতই শোনা যায়। এ ছাড়া বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর সহিংসতা এবং পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে লোকোমাস্টার ও সহকারী লোকোমাস্টারদের নিরাপদ রাখতে হেলমেট পরে ট্রেন চালাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রতিটি ট্রেনের লোকোমাস্টার ও সহকারী লোকোমাস্টাররা নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে এখন থেকে হেলমেট পরে ট্রেন চালাবেন।
রোববার (২৯ অক্টোবর) রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশল বিভাগ থেকে জারি করা এক নোটিশের মাধ্যমে বিষয়টি সব লোকোমাস্টার ও সহকারী লোকোমাস্টারদের জানানো হয়েছে।
ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সব ট্রেনের লোকোমাস্টার ও সহকারী লোকো মাস্টারদের ট্রেন পরিচালনা করার সময় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত হেলমেট ব্যবহার করার জন্য বলা হলো। বিষয়টি লোকোমাস্টার নোটিশ বুকের মাধ্যমে সব ট্রেনের লোকোমাস্টার ও সহকারী লোকোমাস্টারদের অবহিত করার জন্য বলা হলো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোকোমাস্টার জানান, সাধারণ সময়েই দুর্বৃত্তরা পাথর মেরে আমাদের বিভিন্ন লোকোমাস্টারদের আহত করেছে। অনেকের মাথা ফেটে গেছে, চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে। আবার আগামীকাল থেকে অবরোধ। সবকিছু মিলিয়ে রেলওয়ে আমাদের নিরাপত্তার জন্য হেলমেট দিয়েছে, যা আগামীকাল থেকে আমরা ব্যবহার করব। ইতোমধ্যে বিষয়টি আমরা ট্রায়াল দিয়েছি।
তারা আরও বলেন, ২০১৩-১৪ সালে যখন দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল তখনো আমাদের নিরাপত্তার জন্য হেলমেট দেওয়া হয়েছিল। এবারও নির্বাচনের আগে সহিংসতা থেকে আমাদের রক্ষার জন্য রেলওয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ বিন সারোয়ার বলেন, চালকের সেফটির জন্য হেলমেট কেনা হয়েছে। এর বাইরে সুরক্ষার জন্য যা প্রয়োজন সবই দেওয়া হবে। পাশাপাশি রেলস্টেশন ও লাইন ঘিরে নাশকতা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘অবরোধে সারা দেশে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় সব রকমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে আশা করি, যথাসময়ে ট্রেন ছাড়বে।’