অন্তঃস্বত্ত্বা অবস্থায় বিচ্ছেদ, আদালতে পুনরায় বিয়ে

দাম্পত্য কলহ ও পারিবারিক বনিবনা না হওয়ায় বিবাহবিচ্ছেদ (তালাক) হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। সে সময় স্ত্রী ছিলেন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সন্তান জন্মের পর আদালতের শরণাপন্ন হয় ওই নারীর পরিবার। এ ঘটনায় স্বামীকে কারাগারে পাঠান আদালত। ১০ দিন জেলও খাটতে হয় স্বামীকে। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর আট মাসের বাচ্চা কোলে নিয়ে আদালতে পুনরায় বিয়ে হয়েছে ওই দম্পতির।

বুধবার (১৫ জুন) বিকালে এমন বিয়ের আয়োজন হয়েছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হুমায়ন কবীরের কক্ষে। দুই পরিবারের সম্মতি ও উপস্থিতিতেই বিচারকের সিদ্ধান্তে পুনরায় তাদের পুনরায় বিয়ে হয়।

দুই পরিবার ও আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়েছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার হোগলা গ্রামের মৃত এনামুল হকের ছেলে নাদিম আলী (২৭) এবং একই উপজেলার রাজারামপুর উপরটোলা গ্রামের আব্বাস উদ্দিনের মেয়ে শিউলি খাতুনের (১৯)। পরে বনিবনা না হওয়ায় শিউলির গর্ভে সাত মাসের সন্তান থাকা অবস্থায় তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।

তবে নাদিম আলীর দাবি, পেটে বাচ্চা থাকার বিষয়টি বিবাহবিচ্ছেদের সময় তাদের জানানো হয়নি। তিনি বলেন, ‘বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে মনোমালিন্য শুরু হয়। পরে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তবে সে সময় আমরা জানতাম না, আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ছিল। আদালত দুই পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ে দিয়েছেন। বাচ্চার কথা ভেবে আদালতের এই সিধান্তে দুই পরিবারই খুশি। আমরা সুখে-শান্তিতে সংসার করতে চাই।’ আট মাসের ছেলে আজিম এবং সংসারের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি।

বিয়েতে দুই পরিবার ছাড়াও বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ জানান, বিধি অনুযায়ী সন্তান গর্ভে থাকলে বিবাহবিচ্ছেদ হয় না। কিন্তু এখানে তা করা হয়েছিল। পরে মেয়ের পরিবার আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালতের হস্তক্ষেপে পুনরায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করা হয়। এতে আদালত নিষ্পাপ সন্তানকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তার হারানো পিতৃস্নেহ।

পঞ্চাশ হাজার ৫০০ টাকা দেনমোহরে নাদিম ও শিউলির পুনরায় বিয়ে সম্পন্ন হয়। যার মধ্যে ১০০ টাকা নগদ দেনমোহর ছিল বলে জানান আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ।