মঙ্গলবার (৩১ মে) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় উপস্থিত হন মুমিনুল হক। টেস্ট অধিনায়ক ইস্যুতে আলোচনা করেন তারা। এরপর সাংবাদিকদের মুমিনুল জানিয়েছেন, বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে তিনি বলেছেন সামনে আর টেস্ট অধিনায়ক থাকতে চান না।
মুমিনুল জানান, বিসিবি সভাপতি তাকে অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা বলেননি। তিনি নিজেই অধিনায়ক না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আধা ঘন্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে মুমিনুল বলেন, ‘আমি আসলে জিনিসটা চাচ্ছি না। ব্যক্তিগতভাবে আসলেই চাচ্ছি না।’ অভিমান থেকে এমন সিদ্ধান্ত কি না জানতে চাইলে মুমিনুল বলেন, ‘না, অভিমান থেকে নয়।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে নিজ গাড়িতে করে পাপনের গুলশানের বাড়িতে প্রবেশ করেন মুমিনুল। তখন তার চেহারায় ছিল ক্লান্তির চাপ। সঙ্গে তার সহধর্মিণী আসলেও তিনি গাড়ি থেকে নামেননি। মুমিনুল একাই পাপনের সঙ্গে দেখা করতে যান। প্রায় ৩০ মিনিটের বৈঠক শেষে বের হয়ে সংবাদমাধ্যমকে নিজের অধিনায়কের পদে না থাকার সিদ্ধান্তের কথা জানান মুমিনুল।
মুমিনুল বলছিলেন, ‘ওরকম কিছু না, আমি বলেছি, অধিনায়ক হিসেবে আমি দলে অবদান রাখতে পারছি না। আমার কাছে মনে হয় এই মুহূর্তে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া উচিৎ। আমি তো বলে আসছি এখন ওনারা কী সিদ্ধান্ত নেয় ওনাদের ব্যাপার। আপাতত আমি চাচ্ছি ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে, এটা আমার জন্য ভালো। সামনে বোর্ড মিটিং আছে, ওখানে ওনারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’
সঙ্গে যোগ করেন মুমিনুল, ‘কারও ভয়ে নয়। দেখেন যখন আপনি ভালো খেলবেন দল খারাপ করলেও মোটিভেট করতে পারবেন। আমিও ভালো খেলতে পারছি না, দলও ভালো করছে না। এই সময়ে অধিনায়কত্ব করা খুবই কঠিন।’
বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৭ ম্যাচে মাত্র ৩টি জয় আছে মুমিনুলের। ১২টি হারের সঙ্গে ড্র ২টি। তবে তার অধিনায়কত্ব নিয়ে নয়, ব্যাটিংয়ে রান না পাওয়াটাই ছিল আলোচনায়।
সর্বশেষ ১০ ইনিংসে মাত্র ২ বার দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন মুমিনুল, যেখানে সর্বোচ্চ রান ৩৭। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের দুই ইনিংসসহ সর্বশেষ ৭ ইনিংসেই ফিরেছেন দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে। এই ৭ ইনিংসে তার স্কোর- ০, ৯, ২, ৫, ৬, ২, ০।
ক্যারিয়ারের প্রথম ১৪ টেস্টে ৬০-এর বেশি গড় অর্জন করা মুমিনুল ক্রমাগত খারাপ করতে করতে গড় নামিয়েছেন ৪০-এর নিচে। একটা লম্বা সময় তার চেয়ে বেশি টেস্ট গড় ছিল না কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের। অথচ বর্তমানে তার গড় (৩৮.৩১) তামিম ইকবাল (৩৯.৫৩) ও সাকিব আল হাসানের (৩৯.১৭) চেয়ে নিচে।