অতিবৃষ্টি ও ভারতের ঢলে মাধবপুর প্লাবিত, রাবার ড্যামে ফাটল

টানা বর্ষণ ও উজানে ভারত থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিত হয়েছে অগণিত মানুষ, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, পুকুর, ফসলি জমি।
মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাত বুধবার সারাদিন ধরে চলতে থাকায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। তাছাড়া উজানে ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে অনেক রাস্তা, পুকুর ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
বাড়িঘর, মাছ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি ছাড়াও সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বহরা রাবার ড্যাম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সোনাই নদীর বহরা এলাকায় স্থাপিত রাবার ড্যাম দিয়ে প্রচুর পানি মাধবপুরে প্রবেশ করছে, এর ফলে রাবার ড্যামের দুই পাশে ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে। এতে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর, চৌমুহনী,  বহরা, আদাঐর, আন্দিউড়া, বুল্লা, শাহজাহানপুর,  জগদীশপুর ইউনিয়নের অনেক পুকুর ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।
আদাঐর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের কৃষক চালু রহমান জানান, জমি চাষ করে অনেক কৃষক জমিতে ধানের চারা রোপন করেছিল, সে জমিগুলো তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
আন্দিউড়া ইউনিয়নের আন্দিউড়া গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও মৎস্যচাষী সাদেক মিয়া বলেন, ‘হঠাৎ করে এই বন্যা সৃষ্টি হওয়াতে অনেক মৎসচাষীর পুকুর বানের পানিতে তলিয়ে গিয়ে মাছ বের হয়ে গেছে।  আমার দুইটি পুকুর প্লাবিত হয়ে ৫/৬ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।’
এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ চলমান থাকার কারণে বেজুড়া ও বোয়ালিয়া ব্রীজের কাজ অসমাপ্ত হওয়ার ফলে পানি ঠিকমত যেতে পাড়ছে না ও পানির স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে করে আন্দিউড়া সহ কয়েকটি এলাকায় বন্যার তীব্রতা দেখা দিয়েছে।
মাধবপুর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আবু আসাদ ফরিদুল হক জানান, ভারি বর্ষণে অনেক মৎস খামারির মাছ ভেসে গেছে।’
মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজিব সরকার জানান, টানা বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে মাধবপুরে অনেক ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ১২৫ হেক্টর রোপা আমন ও ৬০ হেক্টর সবজি নষ্ট হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে, তবে বুধবার বৃষ্টি হওয়াতে ক্ষতির পরিমান আরো বাড়তে পাড়ে।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফয়সাল জানান, সরেজমিনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার কাজ চলছে।