ওসমানীনগরে অচেতন ৫ প্রবাসীকে উদ্ধার, দুইজনের মৃত্যু

সিলেটের ওসমানীনগরে উপজেলায় নিজ বাড়ি থেকে একই পরিবারের পাঁচ যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেয়ার পথে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

গুরুতর অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ওই পরিবারের তিন প্রবাসী সদস্য।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সকালে ওসমানীনগরের তাজপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় যুক্তরাজ্য ফেরত রফিকুল ইসলামসহ তার পরিবারের ৫ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ তাদের উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে রফিকুল ইসলাম ও তার পুত্র মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। পরিবারের অন্য ৩ সদস্যকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন ধিরারাই গ্রামের রফিকুল ইসলাম। অসুস্থ ছেলে সাদিকুল
ইসলামকে চিকিৎসা করানোর জন্য গত ১২ জুলাই সপরিবারে দেশে ফিরে এক সপ্তাহ ঢাকায় থাকেন। চিকিৎসা শেষে গত ১৮ জুলাই ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর স্কুল রোড এলাকায় তাজপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলকের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় বাসা ভাড়া নেন।

গত সোমবার রাতের খাবার শেষে প্রবাসী রফিকুল ইসলাম তার স্ত্রী সন্তানসহ একটি কক্ষে এবং রফিকুল ইসলামের শ্বশুর আনফর আলী, শাশুড়ি বদরুন্নেছা, শ্যালক দেলোয়ার হোসেন, শ্যালকের স্ত্রী শোভা বেগম ও মেয়ে সাবিলা বেগম (৮) অন্যান্য কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন।

আজ মঙ্গলবার সকালে বাসার অন্য কক্ষে থাকা স্বজনরা অনেকবার ডাকাডাকি করলেও রফিকুল ইসলামসহ ও তার স্ত্রী-সন্তানরা ঘরের দরজা না খোলায় তারা ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে ওসমানীনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কক্ষের দরজা ভেঙে রফিকুল ইসলামসহ তার স্ত্রী হুছনারা বেগম, ছেলে মাইকুল ইসলাম, সাদিকুল ইসলাম ও মেয়ে সামিয়া ইসলামকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম ও মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাকি তিনজনকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত রফিকুল ইসলামের শ্বশুর আনফর আলী, শাশুড়ি বদরুন্নেছা, শ্যালক দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী শোভা বেগমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, আহতদের অবস্থা আশংকাজনক। বিষ জাতীয় কোনো খাবার খাওয়ানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নিহতদের ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম বলেন, বিষক্রিয়ার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। কিভাবে বিষক্রিয়া ঘটেছে তা তদন্তের আগে বলা সম্ভব নয়। যে সকল নিকটাত্মীয় বাসায় ছিলেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।