সোনালি কাবিনের কবি আল মাহমুদের অগ্রন্থিত রচনাসমূহ নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে কবির সর্বশেষ বই “অগ্রন্থিত রচনাবলি: আল মাহমুদ”। বইটির গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেছেন আল মাহমুদের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ট সহযোগী কবি মুহিম মাহফুজ। প্রকাশ করছে নাশাত পাবলিকেশন।
নাশাতের স্বত্বাধিকারী আহসান ইলিয়াস জানান, কবির ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আমরা তার সর্বশেষ বইটি প্রকাশ করতে যাচ্ছি। প্রকাশিতব্য বইটি বিন্যস্ত হয়েছে কবির অপ্রকাশিত ও অগ্রন্থিত রচনাবলি দিয়ে।
এতে গ্রন্থিত হয়েছে কবিতা, অনুবাদ কবিতা, ছোট গল্প, উপন্যাস, আত্মজৈবনিক রচনা, প্রবন্ধ ও নির্বাচিত সাক্ষাৎকার। নিঃসন্দেহে এটি একটি পরিশ্রমসাধ্য কাজ। এর মাধ্যমে আল মাহমুদের রচনাসম্ভারে অনেক হারানো লেখা নতুনভাবে সংযোজিত হবে।
আল মাহমুদ পাঠকরা নতুন করে আল মাহমুদকে জানতে পারবেন। নতুন বৈশিষ্ট্যে আবিষ্কার করতে পারবেন। বাংলা সাহিত্যে এ বই নিশ্চয় গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
আল মাহমুদের দীর্ঘ দিনের ঘনিষ্ট সহযোগী এবং বইটির সম্পাদক কবি মুহিম মাহফুজ বলেন, এ বই আমার প্রায় পাঁচ বছরের চেষ্টার সফল। বইটির রচনা সংগ্রহে দেশ-বিদেশের বিভিন্নজন আমাকে আন্তরিকতাপূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।
বইয়ের লেখাগুলো বিভিন্ন কারণে ব্যতিক্রম। আমি মনে করি, এই বইটি পাঠক-সমালোচকের কাছে আল মাহমুদকে নতুন করে চিহ্নিত করবে। সবশেষ বই হিসেবে এটি যেমন পাঠকের প্রত্যাশা পূরণ করবে। পাশপাশি এর বিষয় বৈচিত্র্য পাঠককে চমকিত করবে।
প্রকাশক সূত্রে জানা যায়, আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বইটি বাজারে আসতে পারে। ২২৪ পৃষ্ঠার এ বইটির মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ৩৯০ টাকা।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোড়াইল গ্রামের এক ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ‘সোনালী কাবিনের’ এই কবি। তার পিতার নাম মীর আবদুর রব এবং মাতার নাম রওশন আরা মীর।
বেড়ে উঠেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার সাধনা হাইস্কুল এবং পরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডু হাইস্কুলের পড়াশোনা করেন। মূলত এই সময় থেকেই তার লেখালেখির শুরু। বাংলা সাহিত্যে অনবদ্য সৃষ্টি কালজয়ী কাব্য ‘সোনালী কাবিনে’র স্রষ্টা বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি।
১৯৬৩ সালে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘লোক লোকান্তর’ সর্বপ্রথম তাকে স্বনামধন্য কবিদের সারিতে জায়গা করে দেয়। এরপর ‘কালের কলস’, ‘সোনালী কাবিন’, ‘মায়াবী পর্দা দুলে উঠো’ কাব্যগ্রন্থগুলো তাকে প্রথম সারির কবি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করে।
মাত্র দু’টি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এরপর পেয়েছেন একুশে পদক, জয়বাংলা পুরস্কার, হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার, ফররুখ স্মৃতি পুরস্কার, জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি পুরস্কার, সুফী মোতাহের হোসেন সাহিত্য স্বর্ণপদক, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার ইত্যাদি।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে তিনি ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন।