হাতে টাকা নেই

অগ্নিদগ্ধ ছেলেকে দেখতে সীতাকুণ্ডে যেতে পারছেন না বাহুবলের সেফু মিয়া

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর মোবাইল ফোনে কল করে চাচার সঙ্গে কথা বলেন আল-আমিন (২২)। এরপর হঠাৎ তার ফোন বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও দেখে তাকে শনাক্ত করেন মা-বাবা।

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের বাগেরখাল গ্রামের সেফু মিয়ার ছেলে আল-আমিন। কাজ করতেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে। ফেসবুকে ভিডিওতে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দেখে তাকে চিনতে পারেন মা-বাবা। কিন্তু টাকা-পয়সা না থাকায় ছেলেকে দেখতে সীতাকুণ্ডে যেতে পারছেন না।

আল-আমিনের মা সুজেনা বেগম বলেন, ‘ডিপোতে আগুন লাগার পর থেকে আমার ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। রবিবার রাতে আমাদের এলাকার এক ছেলে ফেসবুকের ভিডিওতে দগ্ধ অবস্থায় তাকে দেখতে পায়। ভিডিওটি দেখে আমার সন্তানকে চিনতে পারি। কিন্তু হাতে কোনও টাকা নেই। তাকে দেখতে কীভাবে সেখানে যাবো?’

বাবা সেফু মিয়া বলেন, ‘আগুন লাগার পরপরই আল-আমিন তার চাচা ফজলু মিয়ার ফোনে কল দিয়েছিল। তবে আগুন লেগে যাওয়ার খবর জানানোর পরই তার ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি। ভিডিওতে তাকে দগ্ধ অবস্থায় দেখেছি। কোন হাসপাতালে ভর্তি আছে তাও জানি না। হাতে কোনও টাকা নেই যে সেখাবে যাবো।’

পুটিজুরী ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আল-আমিন পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। সম্প্রতি ফাহিম ও রাজিব নামে দুই বন্ধুর সঙ্গে কনটেইনার ডিপোতে গিয়ে কাজে যোগ দিয়েছিল। ঘটনার দিন রাতে শুধু আল-অমিনের ডিউটি ছিল। দুই বন্ধু দিনের ডিউটি করে বাসায় চলে গিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘ভিডিওতে ছেলেকে দেখার পর থেকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা-বাবা। কিন্তু ভাড়ার টাকা না থাকায় তারা সীতাকুণ্ডে যেতে পারছেন না।’

পুটিজুরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুদ্দত আলী বলেন, ‘আল-আমিনের পরিবারের সদস্যরা টাকার অভাবে চট্টগ্রামে যেতে পারছেন না। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সহযোগিতা করবো।’