হাওড়, নদী ও কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে জনসভা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে অনুষ্ঠিত হলো “হাওড়, নদী ও কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে” জনসভা।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এবং বাদাঘাট ও বড়দল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ উদ্যোগে তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের বারেক টিলা সংলগ্ন বালুচরে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

জনসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ধরা-এর উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল এবং সভাপতিত্ব করেন তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নিজাম উদ্দিন।

সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধরা’র আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী, ধরা’র আহবায়ক কমিটির সদস্য ও আদিবাসী পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক সমন্বয়ক ফাদার জোসেফ গোমেজ ও ধরা’র আহবায়ক কমিটির সদস্য ও নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক আব্দুল করিম চৌধুরী কিম।

এছাড়াও সভায় আলোচক হিসেবে আরো অংশগ্রহণ করেন তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুনাব আলী, বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন, বড়দল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মাসুক মিয়া, নোয়াজ আলী মেম্বার প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন হাওড় রক্ষায় আমরা এর সমন্বয়ক তোফাজ্জল সোহেল।

সভায় প্রধান অতিথি সুলতানা কামাল তার বক্তব্যে বলেন, “মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আমরা যদি আমাদেরকে সৃষ্টির সেরা জীব বলে দাবি করি তাহলে আমাদের কিছু দায়িত্ব জন্মায়। সেই দায়িত্ববোধ থেকে আমাদেরকে কিছু কাজ করতে হবে। এদেশের মানুষ হচ্ছে এদেশের মালিক। কাজেই আপনি পরিষ্কারভাবে নিজে মালিকের দায়িত্ব পালন করবেন এবং নদী, হাওর ও কৃষিজমি রক্ষার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। যখন আমরা প্রকৃতির সাথে শত্রুতা করি তখন প্রকৃতিও কিন্তু তার সম্পদ না দিয়ে বরং আমাদেরকে আরো সংকটের দিকে ঠেলে দেয়”। কাজেই আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে থাকতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রধান আলোচক শরীফ জামিল তার বক্তব্যে বলেন “২০০৮ সাল থেকে প্রতিবছর বর্ষায় এ অঞ্চলে পাহাড়ি ঢলের সাথে ব্যাপক বালি ও পাথর এসে হাওড়, নদী, ছড়া ও কৃষিজমি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতির এই বড় বিপর্যয় এ অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় তৈরি করেছে। মেশিন দিয়ে অপরিকল্পিত বালি ও পাথর উত্তোলন বন্ধের সাথে সাথে ছড়া ও কৃষিজমি পুনরুদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। ভারতের মেঘালয়ে অপরিকল্পিত খনিজ সম্পদ আহরণের ফলে ঢলের সাথে আসা বালি ও পাথর এসে যাদুকাটা নদী ও টাঙ্গুয়ার হাওড়ের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়া বন্ধ করতে আন্তদেশিয় পদক্ষেপ দ্রুততার সাথে গ্রহণ করতে হবে”।

জনসভা শুরুর আগে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর পক্ষ থেকে টাঙ্গুয়ার হওয়ার পরিদর্শন করা হয় যেখানে সভায় অংশগ্রহণকারী প্রধান অতিথি, প্রধান আলোচক, বিশেষ অতিথি ও আলোচকগণ অংশগ্রহণ করেন।