হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের কালারডোবা নৌকাঘাটের লাগোয়া ‘হাওড় বিলাস’ চালু হয়েছে গত রবিবার ঈদের দিনে। হাওড়ের এক কোনায় একটি পুরোনো ডাইভারশন রোডে বাঁশ, টিন, বেতের বেড়া আর কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ছোট-ছোট ২০টি টং ঘর।
ঘরগুলোতে আছে প্লাস্টিকের সোফা, চেয়ার, টেবিল। গত কয়েক দিনে ভ্যাপসা গরমে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ তখন ওই টং ঘরগুলোতে চারদিক খেলা করে হাওড়ের শীতল বাতাস। জুড়িয়ে যায় দেহমন প্রাণ।
হাওড় পাড়ে জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ শুনে মনে হবে জলের উপর কোনো স্থির বস্তুর উপর বসে আছেন। ভাগ্য ভালো হলে দেখা মিলবে নানা প্রজাতির মাছের দৌড়ঝাঁপ।
ইট-পাথরের দালান কোটায় আবদ্ধ পরিবেশ থেকে উন্মুক্ত প্রকৃতির মাঝে মুক্তভাবে নিশ্বাস নিতে নানা বয়সী নরনারী ছুটছেন ‘হাওড় বিলাস’এ।
নগর জীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে পরিবার-পরিজন বা বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে অবসর সময় কাটাতে হবিগঞ্জের শহরতলীতে গড়ে তোলা ‘হাওড় বিলাস’ এখন হয়ে উঠেছে এক বিনোদনের স্থান।
সকাল থেকে গভীর রাত অবধি প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, টমটম বা মোটরসাইকেলে হাজারো মানুষ আসছেন এখানে।
ঘরগুলো থেকে অনায়াসে দেখা যায় হাওড়ে চলাচলরত যাত্রী ও মালবাহী নৌকার বহর। অন্যদিকে হবিগঞ্জ বানিয়াচং সড়ক পথে ছুটে চলা যানবাহন। হাওড়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য পাশেই রয়েছে নৌকাঘাট।
সন্ধ্যার পর ‘হাওড় বিলাস’ অন্য রূপ ধারণ করে। হয়ে উঠে রঙিন আলোতে বর্ণিল। টং ঘর ছাড়াও বাইরে বসে সময় কাটানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সাউন্ড বক্স থেকে ভেসে আসা নতুন ও পুরোনো দিনের গানের মূর্ছনায় আপনি হয়ে যাবেন উদাসীন। একই সঙ্গে রয়েছে চা কফি, কোল্ড ড্রিংকস, আইসক্রিম, নাশতা খাওয়ার ব্যবস্থা।
এক সময়ে এই এলাকাটি ‘আতঙ্কের স্থান’ হিসেবে পরিচিত ছিল। সন্ধ্যার পর পথচারীর সর্বস্ব হারানোর অনেক ঘটনার সাক্ষী কালারডোবা। কাল পরিক্রমায় আশপাশে মিল কারখানা গড়ে ওঠার পাশাপাশি ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বেড়ে যাওয়ায় সে আতঙ্ক আর নেই।
হাওড় বিলাসের স্বত্বাধিকারী ফজলে রাব্বী রাসেল বলেন, একটি ব্রিজ নির্মাণের সময় আমার জমির ওপর ডাইভারশন রোড করা হয়েছিল। কাজ শেষ হওয়ার পর এই রোডটিকে সংস্কার করে ‘হাওড়বিলাস’ গড়েছি। এখনো হাওড় বিলাসের কাজ শেষ করতে পারিনি। তারপরেও এটিকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন হাজারো মানুষের ঢল দেখে আমি নিজেই আশ্চর্য হয়েছি। তাই বিনোদনপ্রেমীদের জন্য উন্নতমানের রেস্টুরেন্ট, ওয়াশ রুম নির্মাণসহ আরও নতুন নতুন মাত্রা যোগ করা হবে হাওড় বিলাসে। ‘আগতদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে নিজস্ব কর্মী। এ ছাড়া খুব শিগগিরই জেনারেটর স্থাপনসহ এলাকাটি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে।’