সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেছেন, ’২০৪১ সালে আমরা গড়ে তুলবো উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনারবাংলা। দেশের প্রত্যেকে হবে স্মার্ট নাগরিক। সমাজ, অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রব্যবস্থাও হবে স্মার্ট।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে স্মার্ট বাংলাদেশের নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছেন, ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা। এই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে। তাহলে কেউ আর পিছিয়ে থাকবে না।’
সোমবার জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, প্রত্যেকটি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতেই জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছিলেন; কিন্তু পঁচাত্তরে তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে সবকিছু পাল্টে দেওয়া হয়। তবে তার কন্যা দেশকে মূলধারায় ফিরিয়ে এনেছেন। নিজের হাতে গড়া ডিজিটাল বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে চাইছেন স্মার্ট বাংলাদেশে। তাই সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে এগিয়ে আনতে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন।
মহানগরীর রিকাবীবাজারে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মাসুদ রানা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক আব্দুর রফিক, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ ও গ্রামীণ জনকল্যাণ সংসদের সভাপতি জামিল চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক নিবাস রঞ্জন দাশ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি আতাউর রহমান খান শামসু, সিলেট বধির সংঘের সভাপতি সাংবাদিক আহমদ আলী, এস ও এস শিশু পল্লীর সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম খান ও সিলেট ইলেক্ট্রনিক মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি জুবায়ের আহমদ খান। সঞ্চালনায় ছিলেন সমাজসেবা অধিদফতরের আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রভাষক সানজিদা সুলতানা। ইশারা ভাষায় উপস্থাপন করেন প্রশিক্ষক আবু তাহের মো ইবনে সাঈদ।
বিশেষ অতিথি এসএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মাসুদ রানা বলেন, ‘আজ শপথ নেওয়ার দিন, যাতে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সরকারি কর্মসূচি বাস্তবায়নে কোনো ঘাটতি না থাকে।’
বিশেষ অতিথি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী চান, দেশের কোনো নাগরিক পিছিয়ে থাকবেনা। তাই সমাজসেবা বিভাগ বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করছে।
বিশেষ অতিথি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ উল্লেখ করেন, প্রতিবন্ধীসহ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুই প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পিতার পথ ধরেই কন্যা সমাজের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্যে নানা রকম সুবিধা নিশ্চিত করছেন।
বিশেষ অতিথি বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ে উপপরিচালক আব্দুর রফিক প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরেন।
বিশেষ অতিথি সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। না দেশ আবার পিছিয়ে পড়বে।
এছাড়া গ্রামীণ জনকল্যাণ সংসদের সভাপতি জামিল চৌধুরী প্রতিবন্ধী ও হিজড়াসহ অন্যান্যের কল্যাণে সবাইকে কাজ করার আহবান জানান।
স্বাগত বক্তব্যে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক নিবাস রঞ্জন দাশ বলেন, দেশের সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যেক নাগরিককে উন্নয়নধারায় সম্পৃক্ত করতে সরকারের উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে সমাজসেবা বিভাগ কাজ করছে।
এর আগে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার থেকে একটি শোভাযাত্রা মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে যায়। আলোচনা সভা শেষে এক অসহায় নারীকে একটি ভ্রাম্যমাণ দোকান উপহার দেওয়া হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
এ বছর ‘উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায়-দেশ গড়বো সমাজসেবায়’ প্রতিপাদ্য দিয়ে দেশব্যাপী জাতীয় সমাজসেবা দিবস পালিত হয়।