সিলেট মহানগর জামায়াতের মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা

জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, বিজয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনের শ্রেষ্ট অর্জন। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদরা আমাদের প্রেরণার উৎস ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য জাতিকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দিয়েছিল। অথচ আমরা মুক্তিযুদ্ধ ছিল ঐক্যের বিভক্তির নয়।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দাবীদার পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার স্বাধীনতার মুলনীতিকে ধ্বংস করে দেশে একটি দলের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল। মানুষের মৌলিকা মানবাধিকার ও ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমাদের তরুণ ছাত্র সমাজ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নেমেছিল। সেই আন্দোলন দমাতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ছাত্র-জনতার উপর নৃশংস গণহত্যা চালায়। এতে ২ হাজার মানুষ শহীদ হলেও আহত হন ৩০ হাজারের মতো মানুষ। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের শুধু পতনই হয়নি, খুনী হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে আহতরা এখনো হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাৎড়াচ্ছেন। আমরা তাদের সুস্থতা কামনা করছি। জামায়াত মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ ও জুলাই আন্দোলনের ছাত্র-জনতার বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে কাজ করছে। এক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ আমাদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।

তিনি রোববার সন্ধ্যায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং মহানগর সেক্রেটারী মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সিলেটের ৩৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

এছাড়া অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুুদ্ধের শহীদ ও জুলাই আন্দোলনের নিহতদের মাগফেরাত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য দীর্ঘায়ু, জুলাই আন্দোলনে আহতদের মাগফেরাত কামনা বিশেষ মোনাজাত করা হয়,অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা কমান্ডার মির্জা জামাল পাশা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধা সংসদসিলেট মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোঃ মনাফ খান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড সিলেট মহানগর আহবায়ক দেওয়ান মঞ্জুর আহসান, সদস্য সচিব মোহাম্মদ সুজন মিয়া, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড সিলেট জেলা আহবায়ক কবির আহমদ, জেলা সদস্য সচিব ও সিলেট বিভাগীয় সহ-সভাপতি সুমন আহমেদ,বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকে উপস্থিত ছিলেন- মো: আবুল ফারুক, আবুল কাশেম, মঈন উদ্দিন, মো: সিরাজ চুন্নু, নওয়াব আলী, মো: সোনা মিয়া, মো: সিদ্দেক আলী, আব্দুস শহীদ খাঁন, নজরুল হোসেন, জমির উদ্দিন, বাবুল মিয়া, মো: রইছ আলী, হাজী মখলিছুর রহমান, মো: কলমদর আলী, মো: জানু মিয়া, মো: হিরা মিয়া, শোয়েব আহমদ, সুরুজ আলী, মহি উদ্দিন, ছখাই মিয়া, এখলাছুর রহমান, মছদ্দর আলী, হানিফ আলী, আনোয়ার রাজা চৌধুরী, লিয়াকত আলী বাচ্চু, জানু মিয়া, আজিজুল হক খসরু, সমছির আলী, মো: সুরুজ আলী, সায়েদ আলী ময়না মিয়া ও ছানাওর আলী।এছাড়া অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সদর ও অন্যান্য কমান্ডারগণ উপস্থিত ছিলেন।জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সিলেট মহানগর নায়েবে আমীর ড. নূরুল ইসলাম বাবুল সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব, জাহেদুর রহমান চৌধুরী ও মাওলানা ইসলাম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ বলেন- ইতিহাস স্বাক্ষী দেশের সকল ক্রান্তিলগ্নে জামায়াতে ইসলামী অতন্দ্র প্রহরীর ভুমিকা পালন করেছে। ৫ আগষ্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে জামায়াতের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা অতন্ত্র প্রহরীর ভুমিকা পালন করেছে। আগামীতেও সন্ত্রাস-দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে জামায়াতের কর্মতৎপরতা অব্যাহত থাকবে।সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও যে মহান লক্ষ্যে দেশ স্বাধীন হয়েছিল তা আজো বাস্থবায়ন হয়নি। দীর্ঘ ১৬টি বছর দেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার নেই ও কথা বলার অধিকার ছিলনা। মুক্তিযুদ্ধের ঐক্যের চেতনাকে রাজনৈতিক কারণে বিভক্তির দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। সকল ষড়যন্ত্র নস্যাত করে বিজয়ের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশপ্রেমিক জনতা দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে। এবার বিজয়ের সুফল প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌছে দিতে দেশপ্রেমিক জনতাকে সাথে নিয়ে জামায়াতের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।