সিলেট আর্ট এন্ড অটিজম ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় অটিজম সচেতনতা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই সেমিনারের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন সেন্টার ফর গ্লোবাল অটিজম এ্যাওয়ারনেস।
সেন্টার ফর গ্লোবাল অটিজম এ্যাওয়ারনেস এর চেয়ারম্যান আর্কিটেক্ট নিখিল চন্দ্র গুহ এর সভাপতিত্বে ও সিলেট আর্ট এন্ড অটিজম ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব ইসমাইল গনি হিমন ও এনরোজ বিশ্বাস পাপ্পুর সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাছির উদ্দিন খান, শামসুল আলম সেলিম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘অটিজম এক ধরনের জটিল নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার বা স্নায়ুবৈকল্য। অটিজমে যেসব আচার-আচরণ, উপসর্গ ও প্রভাব দেখা যায় সে সম্পর্কে আমরা কমই জানি। অনেক অটিস্টিক সন্তানের মা-বাবা শুধু এটুকু জানেন, তাদের সন্তান অন্য আর দশটা শিশুর মতো নয়। তাদের আচরণ সবার থেকে আলাদা ও ভিন্ন রকম। অন্যদিকে স্কুলের ক্লাসরুমে, খেলার মাঠেও এরা স্বাভাবিক নয়। ফলে মা-বাবা ও শিক্ষক উভয়েরই অনুমান এই শিশুর মধ্যে কোনো সমস্যা রয়েছে। অথচ যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই শিশুদেরকে আর দশটি শিশুর মত স্বাভাবিক জীবনে অভ্যস্থ করা যায়। এর জন্য কিছু কৌশল রয়েছে এগুলো জানতে হবে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ তোলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুরা আর অস্বাভাবিক থাকবে না। বর্তমান সরকার প্রধানের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে তারা সম্পদে পরিণত হবে। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এসবের দেখভাল করছেন। রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছু প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুদের যত্ন নিচ্ছেন।’
শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সেন্টার ফর গ্লোবাল অটিজম এ্যাওয়ারনেস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজুর চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘অটিজম সচেতনতার জন্য আমাদের সংগঠন এক বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সচেতনতামূলক সেমিনার আয়োজন করবে। পূণ্যভূমি সিলেট থেকে এর যাত্রা শুরু হয়েছে। অটিজন নিয়ে বাংলাদেশে সচেতনতার অভাবে সঠিক ব্যবস্থাপনা হচ্ছে না বলে এটি একটি বড় ধরনের সমস্যায় পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার কণ্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। আমরাও এই উদ্যোগের পাশে থেকে কাজ করতে চাই।’
সভাপতির বক্তব্যে স্থপতি নিখিল গুহ বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগেও দেশে বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুরা অবহেলিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সুযোগ্য কন্যা আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদের উদ্যোগের ফলে বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশুরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। তাদের জীবন যাপনের মানোন্নয়নে শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত উদ্যোগ নিচ্ছেন।’
অটিজম নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের মনোভাবের পরিবর্তন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অটিজম আমাদের সমাজেরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। জাতীয় পর্যায়ে এ ধরনের একটা সচেতনতা তৈরি করা গেছে। তাদেরকে (অটিজমে আক্রান্ত) আরও সুযোগ করে দেওয়া উচিত। তাদের জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত, এটা এখন সবাই বুঝতে পেরেছে।’
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, সরকারী টিচার টেনিং কলেজ সিলেটের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. দিদার চৌধুরী এবং শাবিপ্রবি’র সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কৃতিবাস পাল। সেমিনারে অটিজম বিষয়ে কি নোট পেপার উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডা. জাকিয়া জাহান।