ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকা ও ভারতের মেঘালয়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সিলেটের সাত উপজেলায় পানিবন্দি হয়েছেন ৫ লাখ ৩৩ হাজার ২০২ জন মানুষ।
বিভাগের ১৩টি উপজেলায় বন্যা প্রস্তুতি হিসেবে খোলা হয়েছে ৫৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বন্যাকবলিত ৭ উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন মোট ৪৮০২ জন মানুষ।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত (শুক্রবার) দেড়টায় সিলেটের জেলা প্রশাসন প্রেরিত জেলার বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক তথ্যচিত্রে এসকল তথ্য জানানো হয়েছে।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি পানিবন্দি হয়েছেন গোয়াইনঘাট উপজেলায়—২ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫০ জন। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নই বন্যা কবলিত হয়েছে আর ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ২৩৫৬ জন মানুষ।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়েছেন ৯৩ হাজার মানুষ। উপজেলায় ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ১৩৫জন মানুষ।
কানাইঘাট উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছেন ৮০৬০০ মানুষ আর ৩১টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ১৪৬৬ জন।
জৈন্তাপুর উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে ৬৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ৪৮টি। যার মধ্যে ৬৭৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
জকিগঞ্জ উপজেলায় ৮টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়েছেন ৩৯৮৫২ জন এবং উপজেলার ৫৫টি আশ্রকেন্দ্রের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছেন ৯৫ জন মানুষ।
বিয়ানীবাজার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। এখানে পানিবন্দি হয়েছেন ৫৫০০ মানুষ আর আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৬০ জন।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার মাত্র ১টি ইউনিয়নে বন্যাকবলিত হয়েছেন ৩৫০০ মানুষ। যার মধ্যে ১৫জন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে বন্যাকবলিত গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও জকিগঞ্জ উপজেলার বন্যাকবলিতদের জন্য ১০০০ বস্তা শুকনো খাবার, ৭৫ টন চাল ও নগদ আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এদিকে সিলেটে বন্যার্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য ১৩১টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি আপাতত কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তবে আমরা সার্বিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। বন্যাকবলিতদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে এবং বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ চলছে।‘