সিলেটের কুমারগাঁও থেকে বাদাঘাট হয়ে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়ককে চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হচ্ছে আজ শনিবার (২৬ নভেম্বর)। আজ বিকেলে এ কাজের উদ্বোধন করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ, সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান সিলেট ভয়েস ডটকমকে বলেন, ‘কুমারগাঁও-বাদাঘাট-বিমানবন্দর সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৭২৭ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। তবে এই সময়ের একটু হেরফের হতে পারে।
তিনি বলেন, আজ (শনিবার) বিকেল ৪টায় মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এই প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করবেন। এরপর পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে যাবে।
সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ কাজের উদ্বোধনের জন্য তেমুখী পয়েন্টে উদ্বোধনী ফলক নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ওই সড়কের মইয়ারচর-সোনাতলা বাজার সংলগ্ন এলাকায় প্রকল্পের সাইট অফিস ও শ্রমিকদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি ‘কুমারগাঁও-বাদাঘাট-বিমানবন্দর সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)-এ অনুমোদন পায়। এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ৭২৭ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। কুমারগাঁও-বাদাঘাট-বিমানবন্দর সড়কটি বর্তমানে বেহাল অবস্থায়। প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি নির্মাণ করা হয় ২০১২-১৪ অর্থবছরে। পরবর্তীতে পাথরবাহী ট্রাক চলাচল, বিমানবন্দর অভিমুখীদের সুবিধা এবং পর্যটকবাহী যান চলাচলের জন্য সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার দাবি উঠে। এর প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। ২০১৭ সালে ৪ লেন সড়কের সাথে দুটি সার্ভিস লেন যুক্ত করে তৈরি করা হয় সংশোধিত প্রস্তাবনা। ২০১৯ সালে ৪ লেনের প্রস্তাবনা জমা পড়ে মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু কোন এক অর্দৃশ্য শক্তির কারণে বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির কাজ। শেষ পর্যায়ে সিলেটের রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে সড়কটি সম্প্রসারণের দাবি ওঠে। সাধারণ মানুষও এ দাবির সাথে একাত্ম হন।
বর্তমানে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ থেকে পাথর বহনকারী ট্রাকগুলো সিলেট শহরের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করে। এতে নগরীর অন্যতম কেন্দ্রস্থল আম্বরখানায় দীর্ঘ যানজটের তৈরি হয়। এতে সময়ের অপচয় ছাড়াও আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে। কুমারগাঁও-বাদাঘাট-বিমানবন্দর সড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করা হলে পাথরবোঝাই ট্রাকগুলো সেই সড়ক দিয়ে জাতীয় মহাসড়ক এন-২’তে সহজেই পৌঁছাতে পারবে। এতে সিলেট নগরীর মধ্যে যানজট কমবে, ট্রাকের কারণে ঘটা দুর্ঘটনাগুলোও কমে আসবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ওসমানী বিমানবন্দরে যাতায়াতকারীরাও উপকৃত হবেন। বর্তমানে এ বিমানবন্দরটি দুই লেন বিশিষ্ট সংযোগ সড়কের মাধ্যমে সিলেট নগরীর সাথে যুক্ত। কিন্তু বিমানবন্দরটি বিকল্প সংযোগ সড়ক থাকা প্রয়োজন। কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়কটি আপগ্রেডেশন হলে এই উদ্দেশ্য পূরণ হবে।