ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় ব্লুমেনাউ শহরের একটি কিন্ডারগার্টেনে কুঠার দিয়ে হামলা চালিয়ে অন্তত চার শিশুকে হত্যা করেছে এক যুবক। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও চার শিশু। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ছোট কুঠার নিয়ে কিন্ডারগার্টেনে হামলা চালিয়ে এক যুবক কমপক্ষে চার শিশুকে হত্যা করেছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এক বিবৃতিতে ব্রাজিলের সামরিক পুলিশ বলেছে, হামলার পর ২৫ বছর বয়সী ওই যুবক তাদের একটি পুলিশ স্টেশনে আত্মসমর্পণ করেছে। বর্তমানের তাদের হেফাজতে রয়েছে।
দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন, কিন্ডারগার্টেনের খেলার মাঠে হওয়া এই হামলায় তিন ছেলে ও এক মেয়েশিশু নিহত হয়েছে। তাদের বয়স চার থেকে সাত বছরের মধ্যে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামলার সময় ক্যান্টিনহো বম পাস্তুর নার্সারিতে সর্বমোট ৪০ জনের মতো শিশু ছিল। অভিযুক্ত ওই যুবক প্রাচীর টপকে বেসরকারি ওই কিন্ডারগার্টেনে প্রবেশ করে এবং দৃশ্যত এলোমেলোভাবে শিশুদের ওপর হামলা করে।
স্কুলের একজন শিক্ষক বলেছেন, এটি এমন একটি দৃশ্য যা আপনি কখনো কল্পনাও করতে পারবেন না। একজন সহকর্মী ছুটে এসে বললেন দরজা বন্ধ কর, জানালা বন্ধ কর, কারণ কেউ বিল্ডিং ভেঙে ঢুকছে। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম এটি একটি ডাকাতি। তাই আমি বাচ্চাদের বাথরুমে তালা দিয়েছিলাম, তারপর কেউ এসে বলছিল, সে মারতে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, হামলাকারী একটি কুঠারের পাশাপাশি অন্যান্য অস্ত্রও নিয়ে এসেছিল। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবকরা কিন্ডারগার্টেনে ছুটে আসেন।
সিটি কর্মকর্তারা, আগামীকাল পর্যন্ত স্কুলটিতে সবক্লাস স্থগিত ও রাজ্যের গভর্নর তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে।
এদিকে এই হামলাকে ‘ভয়াবহ ঘটনা’ বলে নিন্দা করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।
টুইটারে তিনি লিখেছেন, নিষ্পাপ এবং অরক্ষিত শিশুরা যখন সহিংসতার শিকার হয়, কোনো পরিবার যখন কোনো শিশুকে হারায়, তার থেকে বড় যন্ত্রণার আর কিছু নেই। আমি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে আছি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রাজিলে স্কুলে হামলার ঘটনা বেড়েছে। গত সপ্তাহে সাও পাওলো শহরের একটি স্কুলে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোর ছুরিকাঘাতে এক শিক্ষককে হত্যা করে। গত বছরের নভেম্বরে এসপিরিটো সান্টো প্রদেশের আরাকরুজের শহরে দু’টি স্কুলে হামলা চালায় ১৬ বছর বয়সী এক বন্দুকধারী। ওই ঘটনায় চারজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।