সুনামগঞ্জে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নানের বিরুদ্ধে বলায় বিএনপির জমায়েতে এক সাংবাদিককে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরে তাকে মারধর করা হয়।
মারধরের শিকারে গুরুতর আহত সাংবাদিক শহীদ নূরকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নূরুলসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা হাসপাতালে তাকে দেখতে আসেন।
এ সময় হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
হামলার পর পর শহীদনূর জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হাসনাত হোসেনের আত্মীয়-স্বজন বিএনপি জমায়েত থেকে কথা কাটাকাটির জেরে তাকে বেধড়ক মারধর করেন। হামলায় নেতৃত্ব দেয় হাসনাতের ভাগ্না হাসপাতালের কর্মচারি হোসাইন এবং গোলজার আহমদ।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে বিজয় মিছিল করতে শান্তিগঞ্জ উপজেলা চত্বরে জড়ো হন বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা। এ সময় সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে শহীদনূর বলেন, তিনি তো আর ফেরেস্তা ছিলেন না।
এটি শোনার পর বিএনপির মিছিলে আসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসেনের ভাগ্না হোসাইন ও গোলজার তাকে মারধর শুরু করেন। পরবর্তীতে অন্যরাও লাঠিসোটা দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায়ে একটি দোকানে আশ্রয় নিয়ে প্রাণরক্ষা করেন সাংবাদিক শহীদ নূর।
তার অভিযোগ, এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপজেলা যুবদল নেতা জিলানী নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ বলেন, ভিডিও বিশ্লেষণ করে আমরা বুঝতে পেরেছি যারা হামলা করেছেন তারা সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের গ্রাম ডুংরিয়ার মানুষ। এ হামলায় তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী হাসনাতের হোসাইন আহমদকেও দেখা গেছে।
তিনি বলেন, যে বা যারা এই হামলা করেছেন তারা আমাদের দলীয় কেউ নয়। প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, খবর শোনে তাৎক্ষণিক আহত শহীদ নূর আহমদকে হাসপাতালে দেখতে আসেন সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ শেরগুল আহমদ, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আকবর আলী ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নূরুল অন্যান্য নেতারা।
দুঃখ প্রকাশ করে তারা বলেন, সাংবাদিক শহীদনূরের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হবে। তারা যদি আমাদের দলের কোনো নেতার আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে থাকে তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না।
সাংবাদিক শহীদনূরের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা সদর ও শান্তিগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকরা।