
নির্বাচনের বছরে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে। রাজনৈতিক সহিংসতায় চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন ১ হাজার ৮০৪ জন।
বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন অধিকার-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ মে) অধিকার-এর মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। প্রতি মাসে সংগঠনটি মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
অধিকার-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিল মাসে রাজনৈতিক সংঘাতে ১১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৮ জনই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে নিহত হন। দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আহত মানুষের সংখ্যা ৩২৭। বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আহত মানুষের সংখ্যা ১২। গত মাসে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের ঘটনা ঘটেছে ২৬টি। আর বিএনপির মাত্র ১টি।
দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে রাজনৈতিক কারণে প্রাণ হারান ৯ জন। ফেব্রুয়ারিতে ৫ জন আর মার্চে ৯ জন মারা যান। এপ্রিলে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ জনে।
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং নিজস্ব অনুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করে মানবাধিকার প্রতিবেদনটি তৈরি করে অধিকার।
বিভিন্ন সভা সমাবেশে বাধা প্রদানের উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিল মাসেও পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে বিরোধী রাজনৈতিক সভা সমাবেশ পণ্ড করে দেয় এবং ‘নাশকতার পরিকল্পনা’, ‘গোপন বৈঠক’ ইত্যাদি অজুহাতে ঢালওভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরুপ রাজধানীর বাংলা মোটর এলাকা থেকে ‘গোপন বৈঠক’ করার অভিযোগে বিএনপির ১৭ নেতাকর্মীকে আটক করার ঘটনা উল্লেখ করা হয় এই প্রতিবেদনে।
গত চার মাসে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৭৩ টি। এর মধ্যে ৬৯ জন ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন বলে অধিকারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। চলতি বছরের চার মাসের মধ্যে এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি মানুষ ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন। প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ বছরের জানুয়ারিতে ক্রসফায়ারে নিহত হন ১৮ জন। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে এ সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৬ ও ১৭। আর এপ্রিলে নিহত হন ২৮ জন।
এছাড়া সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে অনেক। চারমাসে আহত হয়েছেন ২১ জন সাংবাদিক, আর সাংবাদিক লাঞ্ছিত হবার ঘটনা ঘটেছে ৭ টি।
গত চার মাসে ১৪ জন গুমের শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। এছাড়া কারাগারে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের।