যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ঋষি সুনাক। মঙ্গলবার বাকিংহাম প্যালেসে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নতুন সরকারপ্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। এর মধ্যেই নিজের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করলেন তিনি।
নতুন মন্ত্রিসভায় বরিস জনসনের সময়ের অনেক মন্ত্রীকেই ফিরিয়ে এনেছেন সুনাক। বাদ পড়েছেন লিজ ট্রাসের সময়ের কিছু মন্ত্রী। ঋষি ডমিনিক রাবকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করেছেন। তার হাতে তুলে দিয়েছেন ন্যায় মন্ত্রণালয়। জনসনের আমলেও তিনি একই মন্ত্রণালয় পেয়েছিলেন। তবে ট্রাসের সময়ে তিনি বাদ পড়েন। করোনার সময় তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ঋষি সেই পুরনো মন্ত্রণালয় ও পদ ফিরিয়ে দিলেন রাবকে।
জেরেমি হান্ট আগের মতোই অর্থমন্ত্রী বা চ্যান্সেলর অফ এক্সচেকার থাকছেন। তিনি লিজ ট্রাসের আমলে শেষ একসপ্তাহ এই দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি তার পূর্বসূরির দেয়া সব কর ছাঁটাই বাতিল করে দিয়েছিলেন। তিনি আর্থিক ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল জায়গায় নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করছিলেন। তার উপর সেই দায়িত্ব বহাল থাকলো।
এদিকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুয়েলা ব্রেভারম্যানকে আবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করেছেন সুনাক। লিজ ট্রাসের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে গত ২০ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ দিয়েছিলেন সুয়েলা। সুনাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী করেছেন জেমস ক্লেভারলিকে। এসেক্স থেকে ২০১৫তে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। তারপর থেরেসা মে-র আমলে জুনিয়র মন্ত্রী ছিলেন। পরে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু দায়িত্ব পান।
২০১৯ থেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে কাজ করছেন বেন ওয়ালেস। ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ও তিনি এই দায়িত্ব পালন করেছেন এবং করছেন। তাকে একই দায়িত্ব দিয়েছেন সুনাক। তিনি দলের মধ্যে ষথেষ্ট জনপ্রিয়। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে নামেননি।
নাদিম জাহায়িকে কোনো মন্ত্রণালয় ছাড়াই মন্ত্রী করেছেন সুনাক। তবে তাকে কনসারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তিনি করোনার সময় ভ্যাকসিন মন্ত্রী ছিলেন।
সুনাকের বিরুদ্ধে একেবারে শেষ সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসেন পেনি মরডান্ট। তাকে হাউস অফ কমন্সের চেয়ারম্যান করেছেন সুনাক। তাকে আরো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়ার দাবি উঠলেও সুনাক তাতে কান দেননি।
গ্রান্ট শ্যাপস আগে ছিলেন পরিবহনমন্ত্রী। তাকে বাণিজ্যমন্ত্রী করা হয়েছে। তিনি সুনাককে নেতৃত্বের লড়াইয়ে সমর্থন জানিয়েছিলেন। গিলিয়ান কিগানকে শিক্ষামন্ত্রী করা হয়েছে। পরিবহনমন্ত্রী হয়েছেন মার্ক হার্পান। স্টিভ বার্কলেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করা হয়েছে। টেকেজে কফিকে করা হয়েছে পরিবেশমন্ত্রী।
এদিকে ঋষির মন্ত্রিসভার অনেকেই জনসন মন্ত্রিসভায় থাকায় বিরোধীদের সমালোচনা মুখে পড়েছেন সুনাক। বিরোধী দল লেবার পার্টির প্রতিক্রিয়া হলো, জনসন প্রধানমন্ত্রী হননি ঠিকই, কিন্তু তার মন্ত্রিসভাই কার্যত ফিরে এসেছে।
সূত্র: বিবিসি, ডয়েচে ভেলে