সরকার বিরোধী বিক্ষোভে জড়িত থাকার সন্দেহে ১৩ বছর বয়সে আটক হওয়া এক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে সৌদি আরব। মানবাধিকার অ্যাক্টিভিস্টরা জানিয়েছেন, মুর্তজা কুরাইরিস এক সময়ে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছিলেন তবে পরে তাকে নির্দিষ্ট মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণের অভিযোগে ২০১৪ সালে গ্রেফতার হন মুর্তজা কুরাইসিস। রাজনৈতিক কারণে সৌদি আরবে বন্দি হওয়া সবচেয়ে কম বয়সী ব্যক্তি মনে করা হতো তাকে।
এক ভিডিওতে সৌদি আরবের সবচেয়ে পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে অন্য শিশুদের নিয়ে বাইসাইকেলে চড়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় মুর্তজা কুরাইসিসকে। প্রদেশটিতে সংখ্যালঘু শিয়া মতালম্বীদের বসবাস আর মুর্তজা কুরাইসিস নিজেও এই মতাদর্শের অনুসারী।
সৌদি আরবের শিয়া মতালম্বীরা দীর্ঘদিন ধরে সুন্নি মতাদর্শী অধ্যুষিত দেশে বৈষম্যের শিকার হওয়ার এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হওয়ার অভিযোগ করে আসছেন। আরব বিশ্বে বিক্ষোভের বসন্ত শুরু হলে সৌদি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশে রাস্তায় নামে তারা।
নিরাপত্তা বাহিনী ওই বিক্ষোভ দমন করে। এছাড়া বিক্ষোভে জড়িত থাকায় ওই সময় এবং আরও পরে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়। এই বিক্ষোভের ঘটনায় কয়েক জনকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়।
মানবাধিকার গ্রুপগুলো বলছে, মুর্তজা কুরাইসিসকে কয়েক বছর কোনও অভিযোগ ছাড়াই আটক রাখা হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে যখন বিচারের জন্য তোলা হয়, তখন তার বিরুদ্ধে উগ্রবাদী সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। তার বিরুদ্ধে তার বড় ভাইকে সঙ্গ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে পুলিশ স্টেশনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের অভিযোগ আনা হয়। প্রসিকিউটরা তার মৃত্যুদণ্ডের দাবি করেন। অ্যাক্টিভিস্টরা সতর্ক করেন তাকে হয়তো ক্রশবিদ্ধ করা হতে পারে।
বিচারে প্রমাণ হিসেবে মুর্তজা কুরাইসিসের স্বীকারোক্তি আদালতে দাখিল করা হয়। তবে তিনি বরাবর বলে আসছেন এই স্বীকারোক্তি নির্যাতনের মাধ্যমে আদায় করা হয়েছে। এইরকম একজন অল্প বয়সী আসামি জড়িত থাকায় মামলাটি আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করে। আর ধারণা করা হচ্ছে সম্ভবত এই কারণে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে তাকে কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়।
প্রথমে তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে তা কমিয়ে আট বছর করা হয়। এই সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি