দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ‘বৃহত্তর সিলেটে বিনিয়োগের দৃশ্যপট’ সংক্রান্ত এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় চেম্বার কনফারেন্স হলে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ এর সভাপতিত্বে সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক (উপ-সচিব) জুলিয়া যেসমিন মিলি এবং গবেষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহী মো. ফয়সাল।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিডা, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক (উপ-সচিব) জুলিয়া যেসমিন মিলি এবং সভাপতির বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ।
সভায় সিলেটে বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাতসমূহ এবং বিরাজমান সমস্যাবলী নিয়ে আলোচনা হয়। সিলেটের সম্ভাবনাময় খাতসমূহ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরাজমান সমস্যাবলী তুলে ধরার জন্য উপস্থিত আলোচকগণকে অনুরোধ জানান।
সভায় বক্তাগণ সিলেটের সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে গ্যাস শিল্প, সাইট্রাস ফুড প্রসেসিং, বাঁশ ও বেত শিল্প, চা শিল্প, মিঠা পানির মাছ চাষ, ক্যানজাত প্রসেস্ড ফুড, পর্যটন ইত্যাদি খাতকে প্রবল সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করেন।
বক্তারা আরো বলেন, সিলেট অঞ্চল হাওড়, বাওড় ও জলাধার বেষ্টিত হওয়ায় এখানে কৃষি খাতের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে সিলেটের হাওড় অঞ্চল ধান চাষের জন্য অত্যন্ত উপযুক্ত। কিন্তু চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল না পাওয়ায় অনেক কৃষি উদ্যোক্তারা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে এগিয়ে আসতে পারছেন না। এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোর মত বৈজ্ঞানিক উপায়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে চাষাবাদের দিকে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
বক্তারা বলেন, এখনো দেশের কৃষকগণ ধান শুকানোর জন্য রোদের উপর নির্ভরশীল, কিন্তু উন্নত দেশে ড্রায়ার মেশিনের মাধ্যমে ধান শুকানো হয়। সিলেটে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ড্রায়ার মেশিন থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা নিতান্তই কম। বক্তারা সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে আনারস, ড্রাগন ফল, সবুজ মাল্টা, হলুদ তরমুজ ইত্যাদি ফলের চাষ লাভজনক হবে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়াও বক্তাগণ সিলেটে একটি স্টক এক্সচেঞ্জ এবং এনআরবি ইকোনমিক জোন স্থাপনের প্রস্তাব করেন।
এছাড়াও বক্তাগণ ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরজমান সমস্যাবলী নিরসনে ভ্যাট-ট্যাক্স ও অন্যান্য বিভাগের হয়রানী বন্ধকরণ, নদীর নাব্যতা বৃদ্ধিতে নদী খনন, শিল্প প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-চট্টগ্রাম হাইওয়ে সম্প্রসারণ কার্যক্রম দ্রæত বাস্তবায়ন, রেলওয়ের কার্গো টার্মিনাল স্থাপন, সরকারী খাস জমি ব্যবসায়ীদের বরাদ্দ প্রদান, সিলেটে নতুন বিসিক শিল্প নগরী স্থাপন, সিলেটে বিশ্বমানের নার্সিং ও টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট স্থাপন, সিলেট থেকে রপ্তানি বৃদ্ধিতে প্যাকিং হাউজ ও সার্টিফিকেশন ল্যাব নির্মাণ, প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজ নীতিমালা প্রণয়ন, ওয়ানস্টপ সার্ভিসের ভিত্তিতে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠান সমূহকে পরবর্তীতে বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক হয়রানি না করা, পর্যটন খাতের উন্নয়নে সিলেটের বিশেষ একটি এলাকাকে পর্যটন জোন ঘোষণা, নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনে একেক মন্ত্রণালয়ের একেক নীতিমালার পরিবর্তে একটি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সহজ নীতিমালা প্রণয়ন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ ইত্যাদি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, পরিচালক জিয়াউল হক, আলীমুল এহছান চৌধুরী, সদস্য ও বিশিষ্ট উদ্যোক্তা ব্যারিস্টার মইনুল ইসলাম, মনোজাহান ইসলাম পলি, মোহাম্মদ মাহদি সালেহীন, সচিব মো. গোলাম আক্তার ফারুক, উপ-সচিব সানু উদ্দিন রুবেল প্রমুখ।